শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বৈঠক শুরু

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক চলছে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির। আজ শুক্রবার বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে সিলেট সার্কিট হাউসে এ বৈঠক শুরু হয়।শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন। সেখানে বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা। ক্যাম্পাসে শিক্ষামন্ত্রীর আগমনের খবর পেয়ে বেলা দুইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে শুরু করেছেন।

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ক্যাম্পাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি মাইক্রোবাসে করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সার্কিট হাউজের দিকে রওনা হন। এ দলে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাইমিনুল বাশার, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন, সাবরিনা শাহরিন, সুদীপ্ত ভাস্কর, শাহরিয়ার আবেদীন, আমেনা বেগম, মীর রানা ও জাহিদুল ইসলাম।
প্রতিনিধিদলটি বেলা পৌনে তিনটার দিকে সার্কিট হাউসে পৌঁছায়। বৈঠকে যোগদানের আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদীন বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী প্রথমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপর তিনি শাবিপ্রবিতে যাবেন এবং সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে আজ শুক্রবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে বিমানযোগে সিলেটে পৌঁছান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তাঁর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও রয়েছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো শিক্ষামন্ত্রীর সফরসূচির তথ্য অনুযায়ী, বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়টির চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েক শ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করা অবস্থায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।

প্রথম ছয় দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বিকেল তিনটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। ২৬ জানুয়ারি সকালে অনশনস্থলে এসে লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। তবে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. আলমগীর কবীরকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন প্রক্টর নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক জহির উদ্দিন আহমদকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। উপাচার্যের পদত্যাগের পাশাপাশি এই দুজনের পদত্যাগও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চেয়েছিলেন।

Leave a Comment