শরীরের কাম থাকে গর্ভাবস্থাতে

নানা রকম পরিবর্তন এই সময় শরীরে আসে। তবে খিদে কমে যাওয়া, অস্বস্তি ভাব এসব তো থাকেই। আর সেই সঙ্গে থাকে নানা রকম সমস্যা। তবে এই সময় যৌন চাহিদাও থাকে তুঙ্গে। তবে গত মাসে পিরিয়ড মিস হয়েছে। তবে প্রথমে আমল না দিলেও বাড়িতে একবার প্রেগনেন্সি টেস্ট করে নীলাঞ্জনা।

ইয়েস। টেস্ট পজিটিভ। তার মানে এতদিন পর তাদের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। তবে রাহুলকে খবরটা দিতে সে তো আহ্লাদে আটখানা। তবে প্রথমেই ডাক্তার আন্টির কাছে ছোটে ওরা। যে নীলাঞ্জনা প্রায় আট সপ্তাহের অন্তঃস্বত্ত্বা তিনিও বলেন । আর ব্যস, বাড়িতে আনন্দের ঢেউ । ডাক্তার আন্টির কথা পদে পদে মেনে চলছে ওরা। খাওয়া দাওয়া, এক্সারসাইজ, ওষুধ, চেকআপ সব চলছে নিয়ম মেনে।
আর যতদিন যাচ্ছে নীলাঞ্জনা নিজের শরীরের মধ্যে পরিবর্তন বুঝতে পারছে। তবে নিজের শরীরের আরেকটা কচি প্রাণ রয়েছে এটা ভাবাই একটা এক্সাইটমেন্ট। রাহুলও নীলাঞ্জনার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছে ।

তবে ডাক্তার আন্টি ওদের বলেই দিয়েছেন যে, এই সময় নীলাঞ্জনার শরীরে হরমোনের নানা পরিবর্তন আসবে। আর শরীরের রক্ত চলাচল আরও দ্রুত হবে। খিদে বাড়বে। আর স্তনও আকারে খানিকটা বড় হয়ে উঠবে। তবে খাবার এবং ঘুমের অভ্যাসে বড় পরিবর্তন তো আসবেই, পাশাপাশি যৌনজীবনেও আসবে বড়সড় পরিবর্তন। আর ডাক্তার আন্টির কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে।

বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া, ক্লান্তি অবসাদ আসাটা স্বাভাবিক ব্যাপার গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে । আর যদিও কদিন পর থেকেই নীলাঞ্জনার শরীর এসবের সঙ্গে মানিয়ে নেয়। আর প্রথম প্রথম খেতে ইচ্ছে না করলেও কিছুদিন পর থেকেই খিদে বাড়তে থাকে অস্বাভাবিক হারে। তবে এমনকি শরীরে কাম উত্তেজনাও বাড়তে থাকে প্রচণ্ড। আর বাকি সব উপসর্গ না হয় ঠিক আছে। তবে গর্ভাবস্থায় কাম উত্তেজনা, এমন আবার হয় নাকি? কেনই বা হয়? আজ্ঞে হ্যাঁ, গর্ভাবস্থাতেও শরীরের কামনা বজায় থাকে। তবে সেই ইচ্ছে কখনও কম কখনও আবার হয় বেশি। আর তা হয় নানা কারণে।

১. হরমোনের অস্থিরতা :
শরীরের হরমোনের একটা বড়সড় পরিবর্তন হয় গর্ভাবস্থার প্রথম দশ সপ্তাহ । ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এই সময় । তবে শরীরের ক্লান্তি, অবসাদ, বমি ভাব, স্তনের পরিবর্তনের কারণে যৌন ইচ্ছা একেবারে থাকে না বললেই চলে । তবে প্রায় দশ পরে শরীর ধীরে ধীরে ক্লান্তি কাটিযে ওঠে। আর হরমোনের মাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে । তবে এই সময়টায় শরীরে বেশ কামনা জাগে । তার পরের দশ সপ্তাহে সেই ইচ্ছে ফের চলে যায়। তবে শরীরের ওজন বৃদ্ধি, ব্যথা ইত্যাদি নানা কারণে যৌনসঙ্গমে ফের অনীহা দেখা দিতে শুরু করে। আর এগুলি সবই স্বাভাবিক ঘটনা। এক এক নারীর শরীর একেক রকম তবে মনে রাখতে হবে । আর সবার শরীরের চাহিদা বা পরিবর্তন কিন্তু এক নয়।

২. স্তনের পরিবর্তন এবং রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি :
শরীরের রক্তপ্রবাহের গতি অনেকটাই বেড়ে যায় গর্ভাবস্থায় । আর বিশেষ করে স্তন, যৌনাঙ্গ এবং যোনি বেশ স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। তবে এটা একদম স্বাভাবিক। আর এই অবস্থায় যৌনতৃপ্তি তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগও করা যায়।

৩. কামনা বৃদ্ধি :
তবে এই সময় ভ্যাজাইনাল লুব্রিকেশন মাত্রাতিরিক্ত হয়। সপ্তাহ দশেক পড়ে অন্তঃস্বত্ত্বার কামনা বৃদ্ধি পায় অনেকটাই বা অন্তত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ধাপে ।আর শরীরের চাহিদার কথা সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। তবে শরীরের ক্ষতি না করে এই সময় যৌনসঙ্গম দুজনের মধ্যে মানসিক সংযোগ আরও বাড়ায়।

৪.মানসিক চিন্তামুক্ত :
মহিলাদের মন বেশিরভাগ সময়ই চিন্তামুক্ত থাকে গর্ভাবস্থায় । তবে নতুন অতিথির আগমন নিয়েই তিনি ভাবতে থাকেন সারাদিন। আর নিজের রূপ কিংবা ফিগার নিয়ে বিশেষ চিন্তা করেন না তাঁরা। তাই খাবার খান ইচ্ছে মতো। আর মন ভালো থাকে বলেই সঙ্গীর স্পর্শ তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেন গর্ভবতী। আর মা এবং সন্তানের পক্ষে এটা ভালো লক্ষণ।

৫. : শরীরের পরিবর্তন
মহিলাদের শরীরের পরিবর্তন দৃশ্যমান হয় গর্ভাবস্থার ৫-৬ মাস পর থেকেই। তবে ওজন বৃদ্ধি, পেট বড় হওয়া, স্তন, কোমর, নিতম্ব ভারি হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক মহিলাই সঙ্গীকে হারিয়ে ফেলার ভয় পান। আর ফলে তাঁদের মধ্যে জোর করে যৌন সঙ্গমের ইচ্ছা জাগে। তবে যদিও চিকিৎসকরা বলছেন এধরনের মানসিকতা অনুচিত।আর এক্ষেত্রে সঙ্গীকে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে অনেক বেশি।

Leave a Comment