যাদের কাছে অভিযোগ করব, তারাই নির্বাচন কলুষিত করছে: তৈমুর

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন যাদের কাছে অভিযোগ করার কথা, তারাই নির্বাচন কলুষিত করছে এবং সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করছে।

শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের মাসদাইরের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যেখানে বাধা আসবে, সেখানেই প্রতিরোধ করা হবে।

এর আগে শনিবার বেলা দুইটার দিকে সিটি নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ বলেন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার গ্রেপ্তার ও হয়রানির বিষয়ে লিখিত বা মৌখিক কোনো অভিযোগ দেননি। এ সময় সেখানে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।

শনিবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে তৈমুর আলম বলেন, ‘যারা আমার নির্বাচনের নানা কাজের দায়িত্বে আছে, তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সবাইকেই হেফাজতের মামলায় গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ডিসি-এসপি সাহেব বলেন, আমি অভিযোগ করিনি! এখানে সই করা কাগজ আছে আমার কাছে।’

তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘রাজনীতি করতে পদ লাগে না। জনসমর্থন লাগে, কর্মী বাহিনী লাগে। আমাকে সারা পৃথিবীর মানুষ চেনে। যাদের কাছে আমাদের অভিযোগ করার কথা, তারাই নির্বাচন কলুষিত করছে এবং সুষ্ঠু পরিবেশে বাধা সৃষ্টি করছে। আমার বাসার সিসিটিভি ফুটেজ চেক করেন এবং যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের দেখেন। দেখবেন তাদের বেছে বেছে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তৈমুর আলম অভিযোগ করেন, শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট এ টি এম কামালের বাড়িতে তল্লাশি করা হয়েছে। তাঁর গাড়ির চালক আবু তাহেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কামাল নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে একটি গাড়ি ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছিলেন নির্বাচন কমিশন থেকে। পুলিশ সেই গাড়ির চাবি নিয়ে গেছে। সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাইয়ের বাড়িতেও তারা গেছে। এ রকম যে তাকে সমর্থন করছে, তার বাড়িতেই যাচ্ছে।

তৈমুর বলেন, ‘আমরা এতে ভীত না। আমরা মাঠে থাকব। আমার মৃত্যু হলে নির্বাচনের মাঠেই হবে।’

তৈমুর আলম আরও বলেন, ‘আমি বহুবার অভিযোগ করেছি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলেছেন, চারদিকে ষড়যন্ত্র, আমি একা হয়ে যাচ্ছি। এর মানে তার জনসমর্থন নেই। তাদের একমাত্র ক্ষমতা মামলা। দুই টাকার বলপেন চার আনার কাগজ আর মামলাই তাদের এখন মূল ভরসা।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তাদের কমিটমেন্টে (অঙ্গীকার) ঠিক আছে না নেই, তা কালকে দেখবেন।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইভী বলেছেন নারায়ণগঞ্জে কোনো বহিরাগত নেই। তৈমুরের বাড়ি রূপগঞ্জ থেকে লোক আসে। আইভীর সমাবেশে রূপগঞ্জ, আড়াইহাজারের সাংসদেরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছবিই তো তাঁর সঙ্গে যে বহিরাগতরা আছে তা প্রমাণ করেছে। রূপগঞ্জ থেকে মন্ত্রীর ছেলে মিছিল নিয়ে নির্বাচনী সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

তৈমুর বলেন, ‘এ টি এম কামাল মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। আমার প্রধান নির্বাচনী এজেন্টের বাড়িতে পুলিশ যাবে কেন? আমি যখন নাম দিয়েছি তখন তো বলতে পারত সে সন্ত্রাসী, তাকে এজেন্ট দিয়েন না।’ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তৈমুর বলেন, ‘আমার নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবে, আমিও মাঠে থাকব। আমরা মাঠে থেকে প্রতিরোধ করব।’ তিনি আন্তর্জাতিক, জাতীয় গণমাধ্যমসহ বিদেশি দূতাবাসগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুরোধ জানান।

Leave a Comment