মুদ্রার ক্রম বিকাশ সমন্ধে বিষ্ময়কর অজানা যত তথ্য।

মুদ্রার ক্রম বিকাশ সমন্ধে বিষ্ময়কর অজানা যত তথ্য।

আপনি কি জানেন, মুদ্রার ক্রম বিকাশ কীভাবে হয়েছে?

আমরা প্রায়ই ‘টাকা-কড়ি’ কথাটি ব্যবহার করি। অনেকেই হয়তো জানি না যে, আগেরকার দিনে সমুদ্রের কড়ি ছিল আমাদের দেশে বিনিময়ের মাধ্যম। জি! অবিশ্বাস্য হলেও কথাটি সত্য।

সেই সময় কড়ির হিসেব হত, চার কড়িতে এক গন্ডা, কুড়ি গন্ডার এম পণ, ষোল পণে এক কাহন আর চার কাহনে এক টাকা।
বর্তমানে দশমিক পদ্ধতি অনুসারে, এক টাকার একশত পয়সা বিনিময়ে হার নির্ণয় করা হতো।

টাকা কথাটি এসেছে ‘টঙ্ক’ বা ‘টঙ্কক’ থেকে। প্রশ্ন উঠতে পারে, টঙ্ক শব্দটির অর্থ কী? টঙ্ক শব্দটির অর্থ হলো ছেনি! আর ছেনি দিয়ে রুপার পাত কেটে কেটে টাকা তৈরি হতো। সে থেকেই রুপার মুদ্রা ‘টঙ্ক’ নামে পরিচিত হয়।

রূপার পাত কেটে তাতে চিহ্ন অংকিত করে দেয়া হত। সংস্কৃত পাদ -বিংশক থেকে শব্দটি উদ্ভব হয়েছে। বিংশক অর্থ কুড়ির এক চতুর্থাংশ।

রাজস্থানে ‘পসীবা’ নামে মুদ্রার প্রচলন ছিল। হিসেব করা হতো চর পসীবা এক বিংশকের সমান। একটি রূপার টাকার সমান ছিল এক বিংশক। পসীবা ক্রমে পরিবর্তীত হতে হতে পয়সা হয়। অর্থাৎ পসীবা> পাইসা> পৈসা> পয়সা। আবুল ফজল এর লিখিত আইন-ই- আকবরী গ্রন্থে চল্লিশটি আকবরী ছিল এক রুপিয়ার সমান।

প্রথমে তামার পয়সার ওজন সর্বত্রে সমান ছিল না। ইসৃট ইন্ডিয়া কোম্পানি একশ’ গ্রেন ওজন নির্ধারণ করে দেয়। আর ঠিক করে এক টাকা হবে চৌষট্টিটি পয়সায়। তবে দেশীয় স্বাধীন রাজারা তাঁদের নিজস্ব এলাকায় মুদ্রার মানের হেরফের করতেন। সতের শ’ খ্রীস্টাব্দে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পৈসার হিসাব ছিল, এক রুপিয়া আশি পৈসার সমান। পরে তারা আনার প্রবর্তন করেন। ষোল আনায় ছিল এক টাকা। আর পয়সার এক তৃতীয়াংশ ছিল ‘পাই’। আর তখন মোহর নামে সোনার মুদ্রার প্রচলন ছিল। ষোল টাকায় ছিল এক মোহর। মুঘল বাদশাদের আমলেও ‘পাই’ এবং মোহরের প্রচলন ছিল।

~মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

Leave a Comment