মায়ের চোখের সামনে আগুনে পুড়ে ছেলের মৃত্যু

গত ২১ সে সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার কুমিল্লার বুড়িচংয়ে আগুনে পুড়ে মারা যায় কলেজছাত্র মো. আলাউদ্দিন হোসেন।তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হওয়া হয়েছিল।মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। তিনি উপজেলার কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

তিনমাস আগে হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি।তার উদ্ভট কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে পড়ায় তার পরিবারের সদস্যরা তাকে শিকল দ্বারা বেধে রাখে।গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটায় যে ঘরে তিনি শিকলবন্দী ছিলেন ওই ঘরে আগুন লাগে।তার মা হেনা বেগমের চোখের সামনে ঘরে শিকলবন্দী তিনি পুড়ে মারা যান।

খারেরা গ্রামের মো. মুমিনুল ইসলাম ও হেনা বেগম দম্পতির পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে তৃতীয় সন্তান ছিলেন আলাউদ্দিন।কাঁদতে কাঁদতে আলাউদ্দিনের মা হেনা বেগম বলছিলেন, ‘চোখের সামনে ছেলেটা আগুনে পুড়ে মরল, আমি শুধু দেখলাম, কিছু করতে পারলাম না।এ দৃশ্য আমি কোনো দিন ভুলব না।’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আলাউদ্দিনের ঘরে আগুন লাগলে মা হেনা বেগম চিত্কার শুরু করেন।আলাউদ্দিনের বড় ভাই মাইনউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রীও বাড়িতে ছিলেন। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আলাউদ্দিনকে উদ্ধার ও আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে।পরে খবর পেয়ে বুড়িচং থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।তবে এই সময়ের মধ্যে মারা যান আলাউদ্দিন।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মী জহিরুল ইসলাম বলেন,”শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।”

বাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ফয়েজ আহমেদ বলেন,”মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার পর থেকে আলাউদ্দিনকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।ছেলেটা শেষ পর্যন্ত আগুনে পুড়ে মারা গেল।”

পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন,”আজ বেলা ১১টায় লাশটি দাফন করা হয়েছে।”

Leave a Comment