মহাকাশে না গিয়ে পৃথিবী মেরামতে কাজ করুন: প্রিন্স উইলিয়াম

কাশ গবেষণা ও মহাকাশে নভোযান পাঠানো নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে ধনী দেশগুলো। এর মধ্যে দেশগুলোর কেউ কেউ আবার কোটি ডলার খরচা করে যাচ্ছেন মহাকাশ ভ্রমণে। কেউবা মহাকাশে গিয়ে চলচ্চিত্রের শুটিংয়েও ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসবের সমালোচনা করেছেন দ্য ডিউক অব কেমব্রিজ প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি মনে করেন, মহাকাশ নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামার পরিবর্তে সবাইকে বরং এই ভূমণ্ডলের দিকে নজর দেওয়া উচিত।

দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বয়স হয়ে গেছে ৯০ বছর, তবু মহাকাশ ভ্রমণের ইচ্ছা বিন্দুমাত্র কমেনি কানাডার নাগরিক উইলিয়াম শ্যাটনারের। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে মার্কিন বিলিয়নিয়ার জেফ বেজোসের মহাকাশ ভ্রমণ সংস্থা ব্লু অরিজিন থেকে মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে যান প্রখ্যাত এই অভিনেতা। শ্যাটনার খ্যাতি অর্জন করেছিলেন স্টার ট্রেক সিরিজে ইউএসএস এন্টারপ্রাইজের ক্যাপ্টেন জেমস টি কার্কের নাম ভূমিকায় অভিনয় করে। এই অভিনেতাই হচ্ছেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মহাকাশ যাত্রী।

জলবায়ু সংকট নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স উইলিয়াম ওই সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, ‘আমাদের প্রয়োজন বিশ্বের এমন কিছু মেধাবী ও সুন্দর মানসিকতার মানুষ, যাঁরা পৃথিবী ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে বাঁচার জায়গা খোঁজার চেষ্টা না করে এই গ্রহ মেরামতের কাজ করবেন।’ চলতি মাসের শেষ দিকে গ্লাসগোতে কপ-২৬ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সম্মেলনে যথেষ্ট কিছু না করে নেতাদের শুধুই চাতুর্যপূর্ণ কথা ও শব্দের ব্যবহার করার বিষয়ে সতর্ক করে দেন প্রিন্স উইলিয়াম।

প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, ‘আমি মনে করি, কপে খুব স্পষ্ট ও সৎভাবে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে এগুলোর সমাধান কী হতে পারে, তা খুঁজে বের করা জরুরি। আমরা যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে আর কোনো চাতুর্যপূর্ণ বক্তব্য ও শব্দের ব্যবহার শুনতে চাই না।’জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তরুণদের উৎকণ্ঠায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রিন্স উইলিয়াম। তিনি বলেন, ‘এটি ভয়াবহ বিপর্যয় হবে, যখন তাঁর বড় ছেলে প্রিন্স জর্জ ৩০ বছর বয়সে এ ইস্যুতে কথা বলবেন। তখন আর এ নিয়ে কিছু করার থাকবে না।’

ডিউক অব কেমব্রিজ বলেন, ‘আমরা দেখছি, জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। তরুণেরা বড় হচ্ছে। মূলত তাদের ভবিষ্যতের পুরো সময়টাই হুমকির মুখে। এটি তাদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।’ প্রিন্স উইলিয়াম আরও বলেন, তাঁর বাবা প্রিন্স অব ওয়েলস, সবুজ ইস্যুতে তাঁর দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতির জন্য পরিচিত। জলবায়ু সংকট সম্পর্কে যখন তিনি প্রথম কথা বলা শুরু করেছিলেন, তখন তাঁকে ‘কঠিন পথ’ অতিক্রম করতে হয়েছিল।

প্রিন্স উইলিয়ামের সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বিবিসির নিউজকাস্টের উপস্থাপক অ্যাডাম ফ্লেমিং। এ সময় প্রিন্স উইলিয়াম আরও বলেন, তাঁর প্রয়াত দাদা ডিউক অব এডিনবরা পরিবেশ বিষয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের আগ্রহ দেখানো শুরু করেছিলেন।প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, ‘আমরা সাবধান না হলে, এখন যা করছি তার মাধ্যমে আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে ফেলছি। আমি মনে করি এটা অন্যায্য।’

Leave a Comment