ভাসানচর থেকে কক্সবাজারের ক্যাম্পে বেড়াতে এলেন ৬৫ রোহিঙ্গা

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ থেকে স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর ভাসানচর গিয়ে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে বসবাসরত আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছেন। ১৭ ডিসেম্বর দলটির ভাসানচর ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

৬৫ জনের একটি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাসানচর থেকে রওনা হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাসানচরের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) প্রতিনিধি ও ক্যাম্প-ইন-চার্জ (সিআইসি) জহিরুল ইসলাম।

ক্যাম্প-ইন-চার্জ জহিরুল বলেন, ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর প্রথম একদল রোহিঙ্গাকে স্বেচ্ছায় ভাসানচরে পাঠানো হয়। রোহিঙ্গা স্থানান্তর শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো তাঁদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হলো। এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা আবেদন করেছিলেন। তারই সূত্র ধরে সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে ভাসানচরে বসবাসকারী ৬৫ জন রোহিঙ্গার একটি দল টেকনাফ-উখিয়ায় রেখে আসা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। প্রথম এই দল ভালোভাবে ফিরে এলে এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। ১৭ ডিসেম্বর রোহিঙ্গাদের এ দলের ভাসানচর ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।

গত মঙ্গলবার সকালে নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে ৬৫ জনের রোহিঙ্গা দলটি ভাসানচর থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে দুটি বাসে করে তাঁদের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে ভাসানচরে ১৯ হাজারের মতো রোহিঙ্গা বসবাস করছে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দৌজা বলেন, ভাসানচরে বসবাসকারীদের অনেক স্বজন এখনো কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার জন্য ভাসানচরে বসবাসকারীরা সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন। সব দিক বিবেচনা করে তাঁদের কক্সবাজার ক্যাম্পে থাকা স্বজনদের সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আবারও ভাসানচরে ফেরত যাবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গা দলনেতারা বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এত দিন রোহিঙ্গারা মনে করেছিল, ভাসানচর থেকে কোথাও যাওয়া যাবে না। ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের উখিয়া-টেকনাফের ক্যাম্পে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়ায় এখন অনেকে ভাসানচরে যেতে উৎসাহিত হবে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে প্রাণরক্ষার্থে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তারা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় একাধিক পাহাড় উজাড় করে বসবাস করে আসছিল। সরকার কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গা চাপ কমাতে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয়। বর্তমানে ভাসানচরে প্রায় ১৯ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে।

Leave a Comment