ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত আফগানদের নিতে হবে: বাইডেন

আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে প্রথম বৈঠকে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বললেন, “ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত আফগানদের নিজেদের নিতে হবে।”

আফগানিস্তান থেকে দুই দশকের লড়াই শেষে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী নিজেদের প্রত্যাহার অব্যাহত রাখার মাঝেই হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে বৈঠকে মিলিত হন দুই প্রেসিডেন্ট।

বাইডেন জোর দিয়ে বলেন, ওয়াশিংটনের সহযোগিতা এখানেই শেষ হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্র বাইরে থেকে আফগানিস্তানের সেনাবাহিনীকে সহায়তা প্রদান করে যাবে এবং পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহায়তাও অব্যাহত রাখবে।

আরও বলেন, “আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। এটি মূল্যবোধের বিষয়।”

এ সময় আফগানিস্তানকে রক্ষা করতে গত দুই দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র যে রক্ত ও সম্পদ দিয়েছে, তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট গনি।

বর্তমানে আফগান সরকার সশস্ত্র গোষ্ঠী তালিবানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের মুখোমুখি। এ পরিস্থিতিকে গনি ১৮৬১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের সময়কালের সঙ্গে তুলনা করেন। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ও বিদ্রোহী দক্ষিণের রাজ্যগুলোর মধ্যে যুদ্ধের শুরু হয়।

আশরাফ গনি বলেন, “এটি মূল্যবোধের বিষয়, একটি ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা বা অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থার মূল্যবোধ। আমরা ঐক্য, সংহতি ও ত্যাগের বোধের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং আমরা কিছুতেই ছাড় দেব না।”

আরও বলেন, শুক্রবার সরকারি বাহিনী দক্ষিণ ও উত্তরে ছয়টি জেলা তালিবানদের কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছে।

দিনের শুরুতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে পেন্টাগনে বৈঠক করেন গনি। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিশ্লেষণ বলছে, সেনা প্রত্যাহারের ছয় মাসের মধ্যেই তার সরকারের পতন হতে পারে— ওই সময় সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে গনি হেসে বলেন, “এ জাতীয় অনেক ভবিষ্যদ্বাণী ছিল এবং সেগুলো মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।”

এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দেন, ২০ বছরের সামরিক সংশ্লিষ্টতার পর আমেরিকান সৈন্যরা ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আফগানিস্তান ত্যাগ করবে। এরপর একই ঘোষণা দেয় ন্যাটো বাহিনী।

ঘোষণা অনুযায়ী, ১ মে যুক্তরাষ্ট্র সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করে। সে দিন থেকে একাধিক সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে আফগানিস্তানে, নিহত ও আহত হয়েছে অসংখ্য বেসামরিক মানুষ।

এ সব কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কয়েক মাসের মধ্যে আফগান সরকার ও তার সেনাবাহিনী বেহাল পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।

এ দিকে সেনা প্রত্যাহার পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলে সন্ত্রাসী বিরোধী তৎপরতা চালানোর জন্য পাকিস্তানে ঘাঁটি স্থাপন নিয়ে সম্প্রতি তৎপরতা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু প্রস্তাবটি শুরুতেই নাকচ করে দেয় ইসলামাবাদ। কয়েক দিন আগে মার্কিন পত্রিকায় নিজের লেখা নিবন্ধে সেই সিদ্ধান্ত পুনরায় ব্যক্ত করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

Leave a Comment