হ্যাকারদের হাতে ক্রিপ্টো মুদ্রা খোয়ানোর খবর মঙ্গলবার নিশ্চিত করেছে ‘রোনিন’।
২৩ মার্চ সাইবার হামলা চালানো ওই হ্যাকারের পরিচয় এখনো জানতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। বেহাত হওয়া ডিজিটাল সম্পদের মধ্যে আছে এক লাখ ৭৩ হাজার ৬০০টি ইথার টোকেন এবং দুই কোটি ৫৫ লাখ ডলারের কয়েন টোকেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, হ্যাকিংয়ের সময় বেহাত হওয়া ডিজিটাল সম্পদের বাজারমূল্য ছিল ৫৪ কোটি ডলার। তবে, গেল কয়েক দিনে ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় চুরি হওয়া ওই সম্পদের মূল্য বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলারে।
ব্লকচেইন বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান এলিপ্টিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিপ্টো হ্যাকিংয়ের ঘটনা এটি।
জনপ্রিয় অনলাইন গেইম ‘অ্যাক্সি ইনফিনিটি’র সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে ‘রোনিন’-এর। নন-ফাঞ্জিবল টোকেন বা এনএফটি নির্ভর গেইম ‘অ্যাক্সি ইনফিনিটি’; এনএফটি বাজার পর্যবেক্ষক ‘ক্রিপ্টোস্ল্যাম’-এর তথ্য অনুযায়ী, বিক্রির আকারের হিসাবে বিশ্বের বৃহত্তম এনএফটি সংগ্রহ রয়েছে গেইমটিতে।
এক ব্লগ পোস্টে রোনিন জানিয়েছে, ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কারও ব্যক্তিগত ‘কি’ এবং পাসওয়ার্ড চুরি করে ক্রিপ্টো তহবিলে অনুপ্রবেশ করেছিল হ্যাকার।
হ্যাকিংয়ের ঘটনা মঙ্গলবারেই আবিষ্কারের দাবি করেছে রোনিন। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে “অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে” তারা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে সরাসরি কাজ করছে।
পাশাপাশি গেইমারদের তহবিলে যেন ক্ষতি না হয়. সেটি নিশ্চিত করতে অ্যাক্সি ইনফিনিটির সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নেটওয়ার্কটিতে তহবিল জমা রাখা এবং উত্তোলনের সেবা ব্যবহারকারীরাদের জন্যেও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে রোনিন।
রয়টার্স টুইটারের মাধ্যমে রোনিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
তবে, চোরাই ক্রিপ্টো মুদ্রার সন্ধানে রোনিন বাজারের শীর্ষ পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান ‘চেইনঅ্যানালাইসিস’-এর সহযোগিতা নিচ্ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সিংহভাগ ক্রিপ্টো মুদ্রা এখনো হ্যাকারের ডিজিটাল ওয়ালেটেই আছে বলে জানিয়েছে রোনিন।
ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্মগুলোতে হ্যাকারদের দৌরাত্ম্য চলছে অনেক দিন ধরেই। গেল অগাস্টের হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছিলে বিকেন্দ্রীক আর্থিক সেবা ‘পলি নেটওয়ার্ক’। তবে, হ্যাকিংয়ের পর ৬১ কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টো মুদ্রার প্রায় পুরোটাই ফেরত দিয়েছিল হ্যাকার।
২০১৮ সালে ৫৩ কোটি ডলারের ক্রিপ্টো মুদ্রা চুরি হয়েছিল টোকিও-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম ‘কয়েনচেক’ থেকে। ২০১৪ সালে হ্যাকারদের কাছে ৫০ কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টো মুদ্রা হারিয়ে ধসে পরেছিল জাপানের ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ‘মাউন্ট গক্স’।
‘রোনিন’ নেটওয়ার্কের নির্মাতা সিঙ্গাপুরের ভিডিও গেইম স্টুডিও ‘স্কাই ম্যাভিস’। ‘অ্যাক্সি ইনফিনিট ‘ গেইমটিও আছে ওই একই প্রতিষ্ঠানের মালিকানায়। প্রতিক্রিয়া জানাতে রয়টার্স যোগাযোগের চেষ্টা করলেও, সাড়া দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।