বিশ্ববাজারে টানা পাঁচ সপ্তাহ দাম বাড়ল

গত সপ্তাহের শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে। তবে সপ্তাহের শেষ দুই দিন বৃহস্পতি ও শুক্রবার আবার দাম কমেছে। তা সত্ত্বেও এই সপ্তাহে দাম ২ শতাংশ বেড়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ সপ্তাহ বিশ্ববাজারে পণ্যটির দাম বাড়ল। আর শুধু চলতি মাসেই এ পর্যন্ত জ্বালানি তেলের দাম ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়া নিয়ে যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, তাতেই দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে।সপ্তাহের শেষ লেনদেন দিবস শুক্রবার লন্ডনভিত্তিক প্রতি ব্যারেল (৪২ গ্যালন বা ১১৯.২৪ লিটার) ব্রেন্ট ক্রুড অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৪৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ কমে ৮৭ দশমিক ৮৯ মার্কিন ডলারে হয়েছে। অন্য দিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ৪১ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি কমে ৮৫ দশমিক ১৪ ডলারে নেমেছে। গত সপ্তাহের শুরুতে অবশ্য ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই দুটির দামই বেড়ে ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে।বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মোয়া বলেন, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১০০ ডলারমুখী না–ও থাকতে পারে। কিন্তু সরবরাহের সংকটের কারণে এবারের গ্রীষ্মে সেটি ঘটতেও পারে।

অন্যান্য বিশ্লেষকও মনে করেন, বিশ্ববাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে সরবরাহে ঘাটতি বাড়তে পারে। এতে দামের ওপর চাপ পড়বে। পূর্ব ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে।তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেক এবং রাশিয়াসহ অন্যান্য উত্তোলনকারী দৈনিক তেল উত্তোলনের পরিমাণ বাড়িয়ে চার লাখ ব্যারেল করতে চায়।ইউক্রেন সমস্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিকদের মধ্যে শুক্রবারের আলোচনায় বড় কোনো অগ্রগতি না ঘটলেও তাঁরা দেশটিকে কেন্দ্র করে সামরিক সংঘাত এড়ানো ও চলমান সংকট সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন।এদিকে ব্যাংক অব আমেরিকার বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, ওপেকসহ রপ্তানিকারক দেশগুলোর তেল উত্তোলনের সক্ষমতায় দুর্বলতা ও ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে চলতি ২০২২ সালের মাঝামাঝি প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম বেড়ে ১২০ ডলারে উঠতে পারে।অন্য দিকে সুইজারল্যান্ডের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ইউবিএসের পূর্বাভাস অবশ্য আরও নমনীয়। তারা বলছে, এই বছর অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ ডলারের মধ্যে থাকবে।এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক মরগ্যান স্ট্যানলি তাদের নতুন পূর্বাভাসে বলেছে, ব্রেন্ট তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম ১০০ ডলারে উঠতে পারে। এর আগে মরগ্যান স্ট্যানলি প্রতিব্যারেল তেলের দাম ৯০ ডলারে ওঠার পূর্বাভাস দিয়েছিল। রয়টার্স।

Leave a Comment