বিভিন্ন দেশে ইফতারের বাহার

ইফতার পালন করা সুন্নত।  সারাদিনের রোজা পালন শেষে পরিবারের সকলে মিলে আমরা ইফতার করি।  ইফতারে থাকে হরেক রকমের খাবার। যার যার সাধ্যমত মানুষ ইফতারের খাবারের আয়োজন করে থাকে।  তবে সবাই প্রথমে  খেজুর দিয়েই রোজা ভেঙে থাকে। এটি করা সুন্নত।  আমাদের রাসূল (সাঃ) এমনটি করতেন।  বাংলাদেশের মানুষ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইফতারের খাবার হিসেবে পিয়াজু, বেগুনি, ছোলা, মুড়ি, হালিম, জিলাপি এসব খেয়ে থাকে।  তবে বিভিন্ন দেশে ইফতারের খাবারের রয়েছে বিভিন্নতা। চলুন জানা যাক হরেক রকম এই ইফতার সম্পর্কে –   

ভারত – আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতের মুসলিমগণ ইফতারে রাখেন বাহারি খাবার।  তবে ‘হালিম’ এই আইটেমটি ভারতের সবখানেই খুবই জনপ্রিয় একটি ইফতারের আইটেম।  এছাড়াও ব্রোথ ( ভাও ও লেন্টিস,  সিনামন ও বিভিন্ন মসলা দিয়ে তৈরি),  কানজি, সমুসা,  মিন্ট চাটনি এগুলো রাখে ইফতারে।  তবে ভারতের ইফতারের অনেক খাবারই মুলত মিডলইস্ট এর খাবার থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বানানো।  আর তার সাথে রয়েছে মোগলদের খাবারের আচ। 

পাকিস্তান –  পাকিস্তানে ইফতারের খাবারের মধ্যে থাকে ছোলা, জিলাপি, কাবাব, ফলের জুস।  সেখানে অনেক পরিবার আবার ইফতারেই রাতের খাবার  পরিবেশন করে থাকেন ।   

ইরান- ইরানে খেজুর ও গরম পানি অথবা চা খেয়ে রোজাদারেরা রোজা ভেঙে থাকেন।  এছাড়া চা, রুটি, চিজ, সবজি, জুলবিয়া, বামেইহ্ ( এটি এক প্রকার পার্সিয়ান মিষ্টি),  রেশতেহ ( শীতকালিন স্যুপ,  নুডলস জাতীয়)  হালুয়া,  জর্দা,  হালিম, বিভিন্ন প্রকার স্যুপ ইত্যাদি ইরানিরা ইফতারে খেয়ে থাকেন। 

আফগানিস্তান – আফগানিস্তানে  ইফতারের খাবারের আইটেমের মধ্যে রয়েছে মুলত স্যুপ ও পিয়াজ দিয়ে তৈরি মাংস,  কাবাব এবং পোলাও।  

মিডলইস্ট কান্ট্রিজ-  এসব দেশে হালকা ও পুষ্টিকর খাবার পরিবেশন করা হয় ইফতারে। পিঠা, হামিস, সিডস্, ডাম্পিং,  বাদাম এগুলো থাকে খাবারে।  শরীরের শক্তি যোগায় মূলত এমন ধরনের খাবার বাছাই করা হয়ে থাকে। সৌদি আরব, কাতার এসব দেশের ইফতার এরকম।  

মিশর-  মিশরের মুসলমানদের প্রিয় ইফতার হলো কুনাফা ( পাস্তা জাতীয় খাবার)।  যেহেতু, মিশর একটি গরম অঞ্চল তাই মানুষ  ঠান্ডা জাতীয় বেভারেজ,  ফল এসবই বেশি পছন্দ করেন এবং  ইফতারের খাবারের  তালিকায় রাখেন । 

সোমালিয়া- সোমালিয়াদের  সবচাইতে বেশি ইফতারের খাবারের তালিকায় থাকে উটের মাংস, উটের দুধ। তারা বিশ্বাস করে যে,  ইফতারে সবচেয়ে বেশি পুষ্টিকর ও প্রয়োজনীয় খাবার হলো উটের দুধ। অনেকে আবার উটের মাংসের জার্কি ( শুকিয়ে এবং ভেজে)  হিসেবে বানিয়েও খেয়ে থাকেন।  

অঞ্চলভেদে ও ঐতিহ্য অনুসারে রয়েছে ইফতারের খাবারের এই রকমারিতা। তবে ইফতার যেরকমি  হোক সত্যিকারের মুমিনগণ সবসময় এটিই দোয়া করে থাকেন যাতে ইফতারের সময় আল্লাহ বান্দার সব চাওয়াগুলোই পূরণ করে দেন এবং রোযা কবুল করে দেন।  রোযা রাখার মাধ্যমে মুমিনগণ যে সংযমের কাজ করে থাকেন আল্লাহ যেন তার উত্তম প্রতিদান দেন। 

Leave a Comment