‘বিদেশি অর্থায়ন বন্ধ মোদি সরকারের ঘৃণার প্রকাশ’

নোবেল পুরস্কারজয়ী মাদার তেরেসার প্রতিষ্ঠান মিশনারিজ অব চ্যারিটি যাতে আর বিদেশ থেকে অর্থ ভারতে আনতে না পারে, সে জন্য তাদের প্রয়োজনীয় অনুমতি আপাতত বাতিল করা হয়েছে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, কিছু ‘আপত্তিজনক তথ্যের’ কারণেই এই অনুমতি দেওয়া হয়নি।

মিশনারিজ অব চ্যারিটি সদর দপ্তর কলকাতায়, ফলে সেখানে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া অন্য দেশ থেকে প্রতিক্রিয়া এসেছে।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এই ঘটনায় তিনি মর্মাহত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মমতা বলেছেন, মিশনারিজ অব চ্যারিটির ২২ হাজার রোগী ও কর্মীর কাছে খাবার ও ওষুধ পৌঁছাচ্ছে না। আইন সর্বোচ্চ এটা যেমন ঠিক, তেমনই মানবিক দিকটা দেখাও একান্তভাবে প্রয়োজন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলেছে, ধর্মান্তরকরণের অভিযোগ রয়েছে মাদার তেরেসার সংস্থার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মিশনারিজ অব চ্যারিটি দীর্ঘদিন ধরেই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

বিষয়টি নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেছেন তাঁদের বক্তব্য, ভারতে খ্রিষ্টধর্মকে প্রচার করতে ১৫০ বা ২০০ বছর আগে চেষ্টা করা হলেও সেই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে। এখন সারা পৃথিবীতে আর কেউই মনে করেন না যে ধর্মান্তরকরণের মাধ্যমে ১০০ কোটির বেশি হিন্দুকে অন্য ধর্মে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সিপিআইএমের (কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া মার্ক্সিস্ট) পশ্চিমবঙ্গের সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ২২ হাজার রোগীর কাছে ওষুধপথ্য না থাকার বিষয়টি তিনিও সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।

সাবেক অর্থমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম বলেছেন, ‘মাদার তেরেসার স্মৃতিকে এর চেয়ে বড় অপমান হয়তো আর করা যেতে পারত না। তিনি সারা জীবন গরিবের জন্য কাজ করে এই উপহার পেলেন।’

জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র রণদীপ সিং সূর্যেওয়ালা বলেছেন, ‘সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মোদি সরকারের ঘৃণার প্রকাশ আরও একবার ঘটল। এবার মাদার তেরেসা এবং তাঁর মিশনারিজ অব চ্যারিটিকে এর ফল ভুগতে হলো।’
আমেরিকার ইতিহাসবিদ অড্রি ট্রাস্কা বলেছেন, ‘বড়দিনের পর তৃতীয় দিনে বিজেপি একটা উপহার দিল।’ আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যম বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করেছে।

Leave a Comment