বাসর রাতে স্বামী স্ত্রী কী করে

নারী-পুরুষের একটি সম্পর্ক স্থাপন করে বিয়ের মধ্যেই। একমাত্র বৈধ উপায় সেটাই ইসলামে রয়েছে । ইসলামে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা এবং তা যথারীতি আদায় করার জন্য । মোহরানা প্রদান করা ফরজ স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীকে ।

আমাদের সকলের মনে একটু উত্‍সাহ কাজ করে থাকে বাসর রাত বা ফুলসজ্জার রাত শব্দটা শুনলেই সেটা সব মানুষের । ছেলেদের ফুলসজ্জার ব্যপার নিয়ে উত্‍সাহ একটু বেশি থাকে মেয়েদের তুলনায় । তবে ফুলসজ্জার ব্যপার পুরুষদের কিছু দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত। শুধু মাত্র উত্‍সাহ থাকলে চলবে না।

বাসর রাতে কী করবেন কী করবেন না বিয়ের পর ? ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে ? জীবনে একটা গুরুত্বপূর্ণ রাত বাসর রাত সবার । আর জীবনে এমন রাত একবারই আসে সবার । বাসর রাত সম্পর্কে জেনে নিই চলুন ইসলামের দৃষ্টিতে ।

স্বামী স্ত্রীর কি করে বা কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয় বিয়ের পর বাসর রাতে ? এ বিষয়ে ইসলাম কি বলে তা জানা খুব গুরুত্বপণ ।

গোলাপ ফুল দিয়ে দুজন দুজনাকে বরণ করে নিতে হবে। উভয়ই মহান আল্লাহকে যে ভালবাসবেন তা পরিষ্কার ভাবে দুজনা বোঝা পড়া করবেন। হানিমুনে কোথায় যাবেন তা বাসর রাতেই ঠিক করবেন, সে ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীকে এটা ঠিক করতে হবে যে, সবচেয়ে পৃথিবীর মূল্যবান যায়গা মক্কা মদীনায় যাওয়া এবং ওমরা করার পরিকল্পনা করা। ছোট খাট ভুলের জন্য কাউকে তিরষ্কার না করা। কাউকে ছোট না করা। কোন পক্ষের আত্নীয় স্বজনকে ছোট না করা, গালি না দেওয়া, অপমান না করা। জীবনের প্রথম ভালবাসার রাত, তাই ভালবাসা অক্ষুন্ন রাখা। দুজনাতে একটু খোশ গল্প করা, জীবন থেকে কোন গল্প বলা। ভবিষ্যত জেনারেশনের ব্যাপারে আলাপ সেরে নেওয়া। তবে বেশি দূর অগ্রসর না হওয়াই ভাল। মোহরানা যদি বাকি থাকে সেটা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া, অল্প দিনের মধ্যেই মোহরানা পরিশোধ করা। স্ত্রী যদি চাকরি করে তবে টাইম টেবিলটা নিয়ে একটু পরিষ্কার করা। চাকরি না করলে ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা বলা। এ রাতই হল উত্তম ভালবাসার রাত। দুজনার সব আকুতি মেশানো ভালবাসা দিয়ে দুজনাকে জয় করা। কোনভাবেই যেন ফজরের নামাজ কাজা না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা। মানব জীবনের প্রতিটি পর্বে ইসলামের শিক্ষা রয়েছে। দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত সৃষ্ট সমস্যার সমাধান দিয়েছে কোরআন-হাদিস। নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের আলোচনার সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর গোপন বিষয়েও কথা বলেছেন নবী মুহাম্মদ সা.।

ইসলামিক নিয়মে সহবাস করা:

‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শাইতানা ওয়া জান্নিবিশ শাইতানা মা রাযাকতানা।’

অর্থ: আমি আল্লাহর নাম নিয়ে এই কাজ শুরু করছি। হে আল্লাহ! শয়তানকে আমাদের থেকে দূরে রাখ এবং যে সন্তান তুমি আমাদের দান করবে তার থেকেও শয়তানকে দূরে রাখ।

সহবাসের শুরুতে কোন দোয়া পড়তে হয় :
বিসমিল্লাহ বলে সহবাস শুরু করা। তারপর শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া।

ফুলশয্যার রাতে প্রত্যেক স্বামীই নিজের স্ত্রী কাছ থেকে বিষয় আশা করেন :

অপ্সরার মতন স্ত্রীকে দেখা যাবে :বিয়ে করেন জীবনে খুব কম মানুষই বারবার । এই রাতটি জীবনে বারবার ফিরে আসে না । সেদিন নিজের স্বপ্নকন্যা রূপে দেখতে চান তাই প্রত্যেক পুরুষই স্ত্রীকে। যে স্ত্রীকে দেখাবে পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর রমনীর মত আশা করে থাকেন ।

প্রথম পুরুষ স্ত্রীর জীবনে তিনিই : যে স্ত্রী ভার্জিন হবে অধিকাংশ পুরুষ আজও আশা করেন । প্রথম পুরুষ যার সাথে স্ত্রী প্রথম শারীরিক সম্পর্ক করেছে।

একটু লজ্জা:নারীর ভূষণ লজ্জা । তবে জীবনে এই কথাটি ফুলশয্যার রাতেই যেন সবচাইতে বড় সত্য। প্রত্যেক পুরুষই এই বিশেষ রাতে আশা করে থাকেন যে স্ত্রী একটু লজ্জা পাবেন বিয়ে প্রেমের হোক বা পারিবারিক । আর তবেই ধরা দেবেন প্রেমের বন্ধনে একটু প্রেমের ছলকলা খেলবেন।

নিজের প্রশংসা : নিজের প্রশংসা শুনতে কে না ভালোবাসে? আর পুরুষেরা তো স্ত্রীর মুখে নিজের প্রশংসা শুনতে সবচাইতে বেশি পছন্দ করেন। বিয়ের প্রথম রাতেই এই প্রত্যাশা থাকে সবচাইতে বেশি।

শ্বশুর বাড়ির প্রাপ্তি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ : বিয়েতে কী হলো, কী হলো না, কী পেলেন, কী পেলেন না ইত্যাদি নিয়ে হতাশা বা ক্ষোভ ব্যক্ত না করে যা পেয়েছেন সেটা নিয়েই সন্তুষ্টি প্রকাশ করুন। দেখবেন স্বামীর চোখে আপনার সম্মান হয়ে উঠেছে আকাশচুম্বী।

নিজের ভার স্বামীর হাতে ছেড়ে দেয়া : এটা সেই বিশেষ রাত, যে রাতে স্ত্রী নিজেকে অর্পণ করেন স্বামীর জীবনে। নিজের দায়িত্ব ছেড়ে দেন স্বামীর হাতে। আর আপনি যতই স্বাধীনচেতা নারী হয়ে থাকুন না কেন, আপনার স্বামী কিন্তু সারা জীবনই চাইবেন যে আপনি তাকে বিশ্বাস ও ভরসা করুন। আর এই কাজটি বিয়ের রাতে করলে খুশি হয়ে ওঠেন সকল পুরুষই।

Leave a Comment