বরিশালে ‘ভুল বোঝাবুঝি’র অবসান

বরিশালে ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠক হয়েছে। আজ রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসানের সরকারি বাসভবনে এই বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি যাতে আর সামনে না বাড়ে সে বিষয়ে সবাই সম্মত হয়েছে।

বরিশাল শহরের রাজাবাহাদুর সড়কে বিভাগীয় কমিশনারের সরকারি বাসভবনে এই বৈঠকে বিভাগীয় কমিশনার ছাড়াও বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, বরিশাল নগর পুলিশের কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, উপ মহাপুলিশ পরিদর্শক এস এম আক্তারুজ্জামান, বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন মাহমুদ, পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর হোসাইন উপস্থিত ছিলেন। রাত ১১টা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া একটি সূত্র জানায়, বুধবারের হামলা, সংঘর্ষ এবং এর পরের ঘটনাবলি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছে বলে আলোচনা হয়। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে সবাই একমত হন। একই সঙ্গে শান্তি, শৃঙ্খলা, স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সবাই সহযোগিতা করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠক শেষে বিভাগীয় কমিশনারের বাড়ির সামনে প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতারা ছবি তোলেন।

বৈঠকে অংশ নেওয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ তালুকদার মো. ইউনুস রাত পৌনে ১২টার দিকে বলেন, ‘সমঝোতা হয়েছে বা হয়নি এই মুহূর্তে আমি কোনোটাই বলতে চাই না। নো কমেন্টস। তবে আপনারা যেটা চান, অর্থাৎ শান্তি সেটা হবে। আমরা সে লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়েছি। সময় হলেই সব জানা যাবে।’

অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সভায় দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলাগুলো সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) সঙ্গে আইনগত দিক আলোচনা করে প্রত্যাহারের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সমঝোতার পুরো বিষয়টি পরবর্তীতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে বলে তিনি জানান।

পোস্টার-ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে গত বুধবার রাতে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে।

রোববার রাতের বৈঠকের আগে দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংকালে বরিশালেরঘটনায় সমঝোতার ইঙ্গিত দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, বরিশালের ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে। এটা এখন নিরসনের পথে। উভয় পক্ষ নিজেদের অবস্থান থেকে নিরসনের চেষ্টা করছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বর্জ্য অপসারণের বিষয়ে অভিযোগের পরও তাঁরা কিন্তু কাজ করেছে। প্রতিবাদ মিটিং-মিছিল ছিল, সেটাতো বন্ধ হয়েছে। হয়তো প্রশাসন ও মেয়র পরস্পরের মধ্যে কিছু আলোচনা হয়েছে। তাঁরা হয়তো একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে এসেছে। মেয়রতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। স্বাভাবিকভাবেই তিনি একজন দায়িত্বশীল মানুষ। তাঁরা বুঝেছে, এটা নিজেদের মধ্যে একটা মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং। এটা কারও জন্যই শুভকর না। তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিকভাবে ভুল বোঝাবুঝিই হয়েছে। আপনারা কি অন্য কিছু মনে করেন নাকি? সব ঘটনাই ভুল বোঝাবুঝি থেকেই হয়।

Leave a Comment