ফেন্সিডিলের খালি বোতলের মালা গাছে ঝুলিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্ব কদমা গ্রামে পথে ঘাটে পরিত্যক্ত ফেন্সিডিলের খালি বোতলের মালা রাস্তা মোড়ে মোড়ে গাছে ঝুলিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অভিনব কৌশলে প্রতিবাদ করেছে।

গ্রামবাসী পথে ঘাটে ও ফসলের মাঠে পড়ে থাকা ফেন্সিডিলের খালি বোতল কুড়িয়ে মালা গেঁথে রাস্তার একাধিক মোড়ের গাছ গুলোতে ঝুলিয়ে রেখেছে। যেন মাদকের মালা দিয়ে পথচারীদের বরর্ণ করে নিচ্ছে। সেই সাথে স্বরণ করিয়ে দিচ্ছে গ্রামটিতে মাদক কতটা সহজলভ্য। তারা এর থেকে পরিত্রাণ চান। মাদকের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করতে এই অভিনব নীরব প্রতিবাদ।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত সংলগ্ন পূর্ব কদমা, জাওরানী, ভেলাগুড়ি, দৈইখাওয়া সহ সীমান্ত গ্রামে অবাদে চলছে মাদক ব্যবসা। প্রতিদিন রংপুর, হারাগাছ, জলঢাকা, হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ হতে শতশত মাদক সেবি তরুণ যুবকরা মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, কার, অটোরিক্সা যোগে এখানে এসে ফেন্সিডিল পান করে চলে যায়। ভেলাগুড়ি স্কুল মাঠে সন্ধ্যা নামতেই মোটরসাইকেল আরোহীদের হাট বসে যায়। কেউ কেউ ফেন্সিডিল নিয়ে দুরে কোথাও রাস্তারধরে পান করে ফেলে দেয়। মাদক সেবি খালি ফেন্সিডিলের বোতল চারিধারে গিজগিজ করতে দেখা গেছে। এই সব খালি বোতল কুড়িয়ে মালা গেঁথে রাস্তার উপর গাছে ঝুলিয়ে রেখে প্রতীবাদ করছে।

বৃদ্ধা মোঃ মরিম বেগম(৬৩) জানান, কারা মাদক ব্যবসায়ি আমরা সকলে চিনে। সীমান্ত গ্রামে প্রতিদিন একাধিক মোটরসাইকেল একজনের বাড়িত আসলে বুঝা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবিকে তথ্য দিলে মাদক কারবারি জেনে যায়। তার উপর চোরাগুপ্ত আক্রমণ হয়। উল্টো বাড়ির আশেপাশে মাদক রেখে বিজিবি, পুলিশ ও গায়েন্দাদের মাধমে নিরীহ গ্রামবাসী তথ্য দাতাকে ফাঁসিযে দেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র, ইউপি চকিদার, মুক্তিযোদ্ধা, নিরীহ কৃষক মিথ্য মাদক মামলায় বছরের পর বছর হয়রানী হতে দেখা গেছে।প্রশাসনেরও মাদক ব্যবসায়িদের সাথে দারুণ সখ্যতা রয়েছে। বিষয়টি ওপেনসিক্রেট। একশ্রেণির বিজিবি ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তা ছাড়া মাদক ও চোরাকারবারি করা অসম্ভব।সীমান্ত গ্রাম গুলি মাদক ব্যবসায়ি ও চোরাকারবারির হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। সীমান্ত গ্রামটিকে মাদকের ভয়াবহ ছোবল হতে রক্ষা করতে এমন কৌশল নেয়া হয়েছে।

এতে মাদক ব্যবসায়িরা বুঝতে পারবেনা কে এই কাজটি করেছে। আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফি উদ দ্বারাজ জানান, এই গ্রামেই জন্ম, এখানে বেড়ে উঠা, এখানেই শিক্ষকতা করলাম। এমন মাদকের ভয়াবহতা এর আগে কখনো দেখিনি। লোভ- লালসার উর্ধ্বে উঠে কঠোর হস্তে মাদক ব্যবসায়িদের দমন করতে হবে।মাদকের মালা গ্রামটিকে লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে ফেলেছে।জাওরানী বাজার টু ভেলাবাড়ি বাজার রাস্তাটির একাধিক স্থানে নজরে পড়বে।আগামীর ৪১ সালের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশ গঠনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন মাদক।

Leave a Comment