ফরিদপুরে বিশৃঙ্খলায় পণ্ড বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ

ফরিদপুরে বিভক্ত জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের বিশৃঙ্খলার কারণে পণ্ড হয়ে গেছে ফরিদপুর বিভাগীয় সমাবেশ। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে তাঁর সুচিকিৎসার দাবিতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তন চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।বেলা দুইটার দিকে এ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানের আগে হাজারো জনতার উপস্থিতিতে প্রেসক্লাবসহ আশপাশের এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। এতে সামনের মুজিব সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কামটির সদস্য মির্জা আব্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক ও জহুরুল হক। প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদাররেছ আলী, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নায়েবা ইউসুফ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান ও সেলিমুজ্জামান প্রমুখ।


হলরুমের ভেতরে ও বাইরে কর্মীরা হট্টগোল, স্লোগান ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে থাকেন। হট্টগোলের কারণে কারও বক্তব্য ভালো করে শোনা যাচ্ছিল না।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সোয়া দুইটার পর একে একে শামা ওবায়েদ, নায়াবা ইউসুফ, জয়নুল আবদিন ফারুক এবং প্রধান অতিথি মির্জা আব্বাস ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান। দোয়া কামনার মধ্য দিয়ে বেলা সোয়া তিনটার দিকে শুরু হয় অনুষ্ঠান। প্রথমে বক্তব্য দেন ফরিদপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার হোসেন। এরপর বক্তব্য দেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় হলরুমের ভেতরে ও বাইরে কর্মীরা হট্টগোল, স্লোগান ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করতে থাকেন। হট্টগোলের কারণে কারও বক্তব্য ভালো করে শোনা যাচ্ছিল না। কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির একাধিক নেতা বারবার চেষ্টা করেও কর্মীদের হট্টগোল ও স্লোগান থামাতে পারেননি।একপর্যায়ে বিবদমান জেলা বিএনপির দুই পক্ষের দুই ছাত্রনেতার মধ্যে কথা–কাটাকাটি শুরু হয়। এতে অরাজক পরিবেশ তৈরি হয়। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হলে উপস্থিত নেতারা মঞ্চ ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। ওই সময় মির্জা আব্বাস বলতে থাকেন, ‘আমাদের মা জেলে, আর আপনারা এসব কী করছেন? এ বিশৃঙ্খলা করছেন কেন? আমাদের বক্তব্য দিতে দেন।’


আপনারা ফরিদপুরে আজ যা দেখাইলেন, তা আমরা মনে রাখব এবং কেন্দ্রে গিয়ে আপনাদের এ আচরণের কথা তুলে ধরব।
জয়নাল আবদিন ফারুক, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাহট্টগোলের জন্য মির্জা আব্বাসের কথা ভালোভাবে শোনা যায়নি। একপর্যায়ে স্থানটি সমাবেশ করার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ সময় একে একে নেতারা হলরুম থেকে বের হয়ে যান। ওই সময় জয়নাল আবদিন বলেন, ‘আপনারা ফরিদপুরে আজ যা দেখাইলেন, তা আমরা মনে রাখব এবং কেন্দ্রে গিয়ে আপনাদের এ আচরণের কথা তুলে ধরব।’বেলা ৩টা ৪২ মিনিটের দিকে প্রেসক্লাবের অনতিদূরে শমরিতা হাসপাতালের সামনে পার্কিং করা গাড়িতে উঠে নেতারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জুলফিকার হোসেন বলেন, ‘বিভাগীয় সমাবেশে জেলা বিএনপির কতিপয় নেতা ও তাঁদের কর্মীরা নিজেদের জাহির করতে গেলে সমাবেশস্থলে এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক এবং সমভাবে আমাদের জন্য লজ্জাজনক বটে।’

Leave a Comment