পিরোজপুরে মধ্যরাতে অক্সিজেন নিয়ে করোনা রোগীর বাড়িতে ইউএনও

ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইউএনও। হঠাৎ ফোন এলো দুরগ্রামে করোনা আক্রান্ত হয়ে এক গৃহবধূ ভিষণ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তার জীবন বাঁচাতে জরুরি অক্সিজেন প্রয়োজন। ইউএনও তাৎক্ষণিক মধ্যরাতে অক্সিজেন নিয়ে নিজেই ছুটে যান সংকটাপন্ন ওই করোনা রোগীর বাড়িতে।

সোমবার (২৬ জুলাই) রাত ১২টার দিকে পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খালেদা খাতুন রেখা অক্সিজেন নিয়ে উপজেলার বাঁশুড়ি গ্রামের দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ সুমী আক্তার (৩৫) এর বাড়িতে উপস্থিত হন। অসুস্থ গৃহবধূ সুমী আক্তার ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসি মশিউর রহমানের স্ত্রী।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধু সুমী আক্তারের স্বামী কর্মসূত্রে সৌদি আরবে আছেন। বাড়িতে এক ছেলে এক মেয়ে নিয়ে তিনি বসবাস করেন। গত কয়েকদিন আগে অসুস্থ বোধ করলে পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ আসে। সোমবার দিনগত রাতে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। পরিবারের স্বজনরা অসুস্থ গৃহবধূর সৌদি প্রবাসী স্বামীর কাছে বিষয়টি জানান। স্ত্রীর শ্বাসকষ্টের বিষয়টি কাউখালীর প্রবীণ সামাজিক উদ্যোক্তা আব্দুল লতিফ খসরুকে ফোন করে অবহিত করেন। তিনি বিষয়টি কাউখালীর ইউএনও খালেদা খাতুন রেখাকে জানান। ইউএনও জানতে পেরে সাথে সাথে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও সঙ্গে একজন স্বাস্থ্য সেবিকা নিয়ে উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার দুরের বাঁশুড়ি গ্রামে ওই গৃহবধূর বাড়িতে উপস্থিত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কাউখালী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ও প্রবীণ সামাজিক উদ্যোক্তা আব্দুল লতিফ খসরু বলেন, করোনা আক্রান্ত গৃহবধূর প্রবাসী স্বামীর মাধ্যমে করোনা আক্রান্ত গৃহবধূর শ্বাসকষ্টের কথা জানতে পেরে ইউএনও মহোদয়কে অবহিত করি। তিনি মধ্যরাতে নিজেই অক্সিজেন নিয়ে বিপন্ন ওই গৃহবধূর বাড়িতে ছুটে যান। তার এমন জনবান্ধব মহতী কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।

এ বিষয়ে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদা খাতুন রেখা বলেন, করোনা সংকটে আমরা প্রতিটা মানুষই নানা শঙ্কা নিয়ে কাটাচ্ছি। এখন লকডাউনে মানুষ আরো বিপন্ন। যেমন বিপন্ন করোনা আক্রান্ত দুরগ্রামের ওই গৃহবধূ। তিনি গভীর রাতে শ্বাসকষ্টে ছিলেন। খবর পেয়ে সময় মতোই তাকে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পেরেছি। এটি সংকট সময়ে আমাদের মানবিক দায়িত্ব বলে মনে করি।

Leave a Comment