পবিত্র জিনিস মিশ্রিত পানির হুকুম

আচ্ছা বলুন তো, নামাজের পূর্ব শর্ত কী?
হ্যাঁ, নামাজের পূর্ব শর্ত উযূ।

কিন্তু অনেক সময় আমরা বাছ বিচার না করে যেকোনো পানি দ্বারাই উযূ করে ফেলি। অথচ ইসলাম শরীয়াতে সেই পানি দ্বারা যদি উযূ করা জায়েজ না হয়, তাহলে আমাদের উযূ হবে না। আর উযূ না হলে আমাদের স্বলাত কিংবা কুরআন তিলাওয়াতের মতো ইবাদতও আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

তাহলে চলুন আমরা জেনে নিই,

পানির সাথে কী কী পবিত্র জিনিস মিশ্রিত হলে বা কতটুকু পরিমাণে মিশ্রিত হলে তা দ্বারা উযূ সম্পন্ন হবে নাকি হবে না।

যদি পানির সাথে সাবান, আটা ও জাফরান ইত্যাদি কোনো পবিত্র জিনিস মিশ্রিত হয় এবং তা পানির উপর প্রবল না হয় তাহলে পানি পাক থাকবে এবং তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হবে।

আর যদি মিশ্রিত জিনিস পানির উপর প্রবল হয় অর্থাৎ পানির তরলতা ও প্রবাহ গুণ দূর করে দেয়। তাহলে পানি পাক থাকবে বটে, কিন্তু তা দ্বারা উযূ করা সহীহ হবে না।

যদি দীর্ঘ দিন অবস্থানের কারণে পানির রঙ, স্বাদ ও গন্ধ পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে পানি পাক থাকবে এবং তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা যাবে।

যদি পানির সাথে এমন জিনিস মিশ্রিত হয়, যা সাধারণত পানি থেকে পৃথক হয় না। যেমন- শেওলা, বৃক্ষের পাতা ও ফল, তাহলে সেই পানি পাক থাকবে এবং তা দ্বারা তাহরাত হাসিল হবে।

যদি পানির সাথে দ্বিগুণ বিশিষ্ট কোন তরল পদার্থ মিশ্রিত হয়। যথা- দুধ ( দুধের রঙ ও স্বাদ আছে, কিন্তু গন্ধ নেই) তাহলে দেখতে হবে যদি পানিতে তার একটি মাত্র গুণ প্রকাশ পায় তাহলে পানি প্রবলিত ধরা হবে। সুতরাং সেই পানি দ্বারা উযূ করা জায়েজ হবে না।

আর যদি পানিতে তিন গুণ বিশিষ্ট কোনো তরল পদার্থ মিশ্রিত হয়। যেমন- সিরকা। তাহলে দেখতে হবে পানি যদি দুটি গুণ প্রকাশ পায়, তাহলে পানি প্রবলিত বলে গণ্য হবে এবং তা দ্বারা উযূ করা জায়েজ হবে না।

কিন্তু যদি পানির সাথে গুণ বিহীন তরল পদার্থ মিশ্রিত হয়, যেমন- ব্যবহৃত পানি ও গন্ধ বিহীন গোলাপজল। তাহলে ওজন দ্বারা প্রবলতা নির্ধারণ করতে হবে।

সুতরাং এক রিতল অবিমিশ্র পানির সাথে যদি দুই রিতল ব্যবহৃত পানি মিশে যায়, তাহলে সে পানি দ্বারা উযূ করা জায়েজ হবে না। আর যদি দুই রিতল অবিমিশ্র পানির সাথে এক রিতল ব্যবহৃত পানি মিলিত হয় তাহলে সে পানি দ্বারা উযূ করা জায়েজ হবে।

এই নিয়ম মেনে যেকোনো পানি দ্বারা আপনি উযূ সম্পন্ন করতে পারবেন, ইন শা আল্লাহ।

এই সমস্ত ফিকহ প্রদান করেছেন- “হযরত মাওলানা শফীকুর রহমান নাদভী (র:)

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment