নিজের গাছও ইচ্ছেমতো কাটা যাবে না

মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যক্তিমালিকানাধীন গাছ কাটতেও অনুমতির বিষয়টি বিবেচনা করতে বলা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী ভার্চ্যুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যাঁরা সাধারণ বাগান করবেন বা স্থায়ী গাছ লাগাবেন, সেগুলোও তাঁরা তাঁদের ইচ্ছেমতো কাটতে পারবেন না। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এ রকম নিয়ম আছে। সামাজিক বনায়নকেও সুরক্ষা দিতে বলা হয়েছে। এখানে বুঝতে হবে, স্থায়ী গাছের কথা বলা হয়েছে। লাউগাছ কাটতে সমস্যা নেই।

বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় বিদেশে যেতে ইচ্ছুক শ্রমিকেরা যাতে প্রতারিত না হন, সে জন্য এ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো আরও স্বচ্ছ করা এবং এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচার চালাতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বিদেশে যেতে জমিজমা বিক্রি না করে প্রয়োজন হলে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শ্রমিকদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিদেশে যে লোকজন যাবেন, সেই কাজ সুনির্দিষ্ট ও স্বচ্ছ করে দিতে এবং টেলিভিশন, রেডিওসহ গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। মানুষকে বলতে হবে, এরা হলো কর্তৃপক্ষ এবং এই পরিমাণ টাকা লাগবে। আর যদি টাকার প্রয়োজন হয়, তাহলে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে যেন ঋণ নিয়ে যান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, যে শ্রমিকেরা বিদেশে যাবেন, তাঁরা যেন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বা তাদের অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। কোনোভাবেই যেন তাঁরা অতিরিক্ত টাকা না দেন। অনেকে না জেনে টাকা পরিশোধ দেন। সে জন্য মন্ত্রিসভা প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে।

শ্রমিকেরা যাতে জমি বিক্রি না করে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যান, সে বিষয়ে উৎসাহ দিতেও বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতে সুবিধা হবে যে ব্যাংক নিয়োগটি ঠিক আছে কি না, তা নিশ্চিত না হয়ে টাকা দেবে না। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিও একটি সুরক্ষা পাবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, আলোচনায় এসেছে, দালাল শ্রেণির লোকজনের খপ্পরে পড়ে কয়েকজন বাড়িঘর বিক্রি করে তিন-চার লাখ টাকা করে দিয়ে মালয়েশিয়ায় গেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে নিঃস্ব হয়ে ফেরত এসেছেন তাঁরা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকে আলোচনা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, দেশে ১০০টি শিল্প পার্ক হচ্ছে বেজা ও অন্যদের। অনেক জায়গায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। সে জন্য এটাও যেন প্রচারে আনা হয়।

৮৯% সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত
মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২১ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। তাতে জানানো হয়, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মন্ত্রিসভায় মোট ৬৮৯টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৬১৫টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়েছে; যার হার ৮৯ শতাংশের বেশি। বাকি প্রায় ১১ শতাংশ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন।

মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতকাল ‘বাংলাদেশের জাতীয় সংরক্ষণ কৌশল ২০২২-২০৩৬’–এর খসড়া এবং আমদানি নীতি আদেশ ২০২২-২৪–এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।

Leave a Comment