ধর্মকে ভুল ব্যাখ্যায় বারবার কলঙ্কিত করা হচ্ছে: হানিফ

ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তথাকথিত ধর্ম ব্যবসায়ীরা বারবার ধর্মকে কলঙ্কিত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ির একটি কমিউনিটি সেন্টারে প্রয়াত ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিমের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে গত বছর তারেক মারা যান।
তারেক সোলেমান সেলিম স্মরণসভা পরিষদ আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিষদের চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

দেশের নানা জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মাহাবুব উল আলম হানিফ বলেন, সনাতন ধর্মের পূজামণ্ডপে দেবতার ওপর কোরআন শরিফ রেখে সাম্প্রদায়িকতার বীজ ছড়িয়ে দেশের মধ্যে হানাহানি করা হলো। যে ব্যক্তি করলেন তিনি ইতিমধ্যে ধরা পড়েছেন। তিনিও একজন মুসলমান।

বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করতেন উল্লেখ করে আরও বলেন, চার মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সংবিধান রচিত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বীজ বপন করেন জিয়াউর রহমান। জামায়াতকে রাজনীতি করার বৈধতা দেন। স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিলেন। সংবিধানের মধ্যে ধর্মকে সংযোজন করলেন। এর মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশের মধ্যে যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করেছিলেন, সেখান থেকে আস্তে আস্তে গাছ হয়েছে।

এই চারা গাছটিকে নার্সিং করার পর এরশাদ সাহেব ক্ষমতায় এলেন উল্লেখ করে হানিফ বলেন, এরশাদ সাম্প্রদায়িকতার এই চারা গাছটিকে লালন–পালন করে আরও বড় করলেন। এরপর ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এই গাছটির শিকড় ছড়িয়ে পড়ে।

হানিফ বলেন, ‘আজ আমাদের তরুণসমাজকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা যার যার ধর্ম পালন করব। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলামে সব ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাতে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। অন্য ধর্মকে আঘাত করার কথা বলেননি। তারপরও কেন আজ এই সাম্প্রদায়িকতা? এর একটাই কারণ ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা।’

ইসলামি বক্তাদের ধর্মের ভালো দিকগুলো তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, ‘যাঁরা ইসলামি বক্তা, তাঁদের প্রতি অনুরোধ থাকবে ধর্মের ভালো দিকগুলো আপনারা ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমে তুলে ধরুন। ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ঠেলে দিয়ে আমাদের ধর্মকে কলঙ্কিত করবেন না। তরুণ–যুবসমাজকে আহ্বান জানাব, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে।’

স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান।

Leave a Comment