চেয়ারে বসা নিয়ে ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র খুন

নেত্রকোনায় পূর্বশত্রুতার জের ধরে চা স্টলের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আনোয়ার হোসেন (২৫) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নে বড়িহন্দ বাজারে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।

আহত দুজনকে প্রথমে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

আহত দুজন হলেন- ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র নিহত আনোয়ারের বাবা মকবুল হোসেন (৫৫) এবং তারই চাচাতো ভাই ও আবদুর রহমানের ছেলে মনির (২৫)।

হতাহতদের সবাই কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা।

নিহতের বাবা আহত মকবুল হোসেন বিজিবি’র (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) অবসরপ্রাপ্ত সদস্য।

হামলার সঙ্গে দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের বড়িহন্দ গ্রামের মরম আলী (৬০), তার দুই ছেলে সোহেল (২৬) ও জুয়েল (১৮) এবং আমছর আলী জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, দুর্গাপুরের বড়িহন্দ ও কলমাকান্দার আনন্দপুর গ্রাম এই গ্রামের সীমানা সংলগ্ন স্থানীয় কবরস্থানকে কেন্দ্র করে আগেই থেকে দু’পক্ষের মাঝে বিরোধ চলে আসছিল। প্রায় তিন বছর আগে এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় এবং মামলাও হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে আনোয়ার বড়িহন্দি বাজারে একটি চায়ের স্টলের চেয়ারে বসেছিলেন। এ বসাকে কেন্দ্র করে বড়িহন্দি গ্রামের মরম আলীর ছেলে জুয়েল আনোয়ারের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় লিপ্ত হয়।

পরে বাড়ি থেকে ছুরি এনে জুয়েল তার বাবা মরম আলী, ভাই সোহেল ও পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে আনোয়ারকে ছুরিকাঘাত করে। এতে আনোয়ার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

খবর পেয়ে বাজারে থাকা আনোয়ারের বাবা মকবুল ও চাচাতো ভাই মনির প্রতিবাদ করলে সোহেল, মরম আলী, আমছর আলীসহ এ পক্ষের লোকজন মকবুল ও মনিরকেও ছুরিকাঘাত করে।

খবর পেয়ে বাজারে থাকা আনোয়ারের চাচাতো ভাই হানিফ ও আত্মীয়-স্বজন এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষের লোকজন ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

স্থানীয়দের সহায়তায় তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাত সোয়া ৯টার দিকে দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান আহতদের স্বজনেরা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আনোয়ারকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহনুর-এ আলম বলেন, আহতদের ময়মনসিংহ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের লাশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে।

পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানান তিনি।

Leave a Comment