কলকাতায় আটকা ১৫ বাংলাদেশি নাবিককে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ

এক মাসের বেশি সময় ধরে কলকাতায় আটকা ১৫ বাংলাদেশি নাবিককে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন। এর আগে এক ভিডিও বার্তায় দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন নাবিকেরা। তবে কবে নাগাদ তাঁরা দেশে ফিরতে পারবেন, সেটি নিশ্চিত নয়।

গত ২৪ মার্চ কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের (কলকাতা পোর্ট) নেতাজি সুভাষ ডকে (পণ্য খালাস স্থান) জাহাজে পণ্য বোঝাইয়ের সময় কাত হয়ে উল্টে ডুবে যায় বাংলাদেশি জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট-১। জাহাজে থাকা পাইলটসহ ১৫ জন নাবিক এ সময় কোনোমতে প্রাণ বাঁচান।

বন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদের উদ্ধার করে কলকাতা মেরিন ক্লাব হোটেলে (সি ম্যান হোস্টেল) রাখে। নাবিকদের অভিযোগ, বাংলাদেশ সরকার বা ভারতের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁদের দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নিচ্ছে না।

তবে এবার তাঁদের ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে বাংলাদেশ উপহাইকমিশন। এ লক্ষ্যে উপহাইকমিশনের এক কর্মকর্তা কলকাতা বন্দরে গিয়ে বাংলাদেশি নাবিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দেখা করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও। এ ছাড়া উপহাইকমিশন বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদনে বাংলাদেশি নাবিকদের ফেরত পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেছে।

আটকা নাবিকদের পাসপোর্ট থাকলেও ভিসা নেই। তাঁরা নিয়মমাফিক জিও নিয়ে কলকাতা বন্দরে এসেছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনার পর জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ ডুবন্ত জাহাজটিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করলে বিপদে পড়েন নাবিকেরা।

ভিসা না থাকায় তাঁদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজন ভারতের বৈদেশিক নাগরিক নিবন্ধন দপ্তর বা এফআরআরও দপ্তর থেকে অনুমতিপত্র। সেই পত্র ইস্যু করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকেই চিঠি দিতে হবে এফআরআরও দপ্তরে। সেখান থেকে অনুমতি পেলে ১৫ নাবিক দেশে ফিরতে পারবেন।

কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এলে আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেই। সেই প্রক্রিয়া এখন চলছে।’

এক মাসের বেশি সময় ধরে আটকা থাকলেও নাবিকদের দুর্দশা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন নাবিকদের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করা হয়।

সেখানে ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি মেরিন ট্রাস্ট–১-এর প্রধান প্রকৌশলী বক্তব্য দেন। দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আমরা বাঁচতে চাই, আমাদের বাঁচান।’ পরিবার–পরিজনের সঙ্গে ঈদ করার আকুতিও ঝরে পড়ে তাঁর কণ্ঠে।

Leave a Comment