করোনায় স্থলবন্দরের জমজমাট ব্যবসা

দেশের স্থলবন্দরগুলোর ব্যবসা বেড়েছে করোনার বছরে । তেমনি পণ্য আমদানি-রপ্তানিও বেড়েছে ,একদিকে যেমন আয় বেড়েছে ।একাধিকবার নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও স্থলবন্দরগুলো দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে তেমন প্রভাব পড়েনি করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিদায়ী অর্থবছররে । এই প্রথম বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আয় ২৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেল বিদায়ী অর্থবছরে । তবে এ ছাড়া স্থলবন্দর দিয়ে বার্ষিক আমদানি-রপ্তানি আবারও দুই লাখ টন ছাড়াল বলে জানা যায় ।

এসব তথ্য জানা গেছে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে । এই কর্তৃপক্ষ দেশের সব স্থলবন্দর দেখভাল করে । তবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে বিশেষ করে ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে বাণিজ্য সহজ করতে ২০০১ সালে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়ছিল । তবে বর্তমানে ২৪টি স্থলবন্দর থাকলেও কার্যকর আছে মাত্র ১২টি । এই তিন স্থলবন্দরের ওপর নির্ভরশীলতা অতি মাত্রায় তবে বেনাপোল, ভোমরা ও বুড়িমারী-আমদানি-রপ্তানিতে ।

তবে স্থলবন্দরের আয়ের প্রধান উৎসগুলো হলো খালাস হওয়ার অপেক্ষায় থাকা পণ্যের জন্য শেড ও ইয়ার্ড ভাড়া, ওজন মাপার মাশুল, প্রবেশ মাশুল, শ্রমিক মজুরি, দলিলাদি প্রক্রিয়াকরণ মাশুল ইত্যাদি । তবে এক বছরে স্থলবন্দরের আয় বেড়েছে ৩০% । বিদায়ী অর্থবছরে স্থলবন্দরগুলো থেকে ২৬৭ কোটি টাকা আয় হয়েছে । তবে এক বছরের ব্যবধানে ৩০ শতাংশের বেশি আয় বেড়েছে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে । আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে সব মিলিয়ে আয় হয়েছিল ২০৩ কোটি টাকা বেশি । মোট আয়ের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি এসেছে বেনাপোল, ভোমরা ও বুড়িমারী—এই তিনটি স্থলবন্দর থেকে । আয় ১৮৩ কোটি টাকা এই তিনটি বন্দরের ।

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে বিধিনিষেধের আওতায় বাইরে ছিল স্থলবন্দরের কার্যক্রম ,বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন । তাই আমদানি-রপ্তানিও বিঘ্নিত হয় । আর এ ছাড়া ব্যবসায়ীরা এই করোনার সময়ে আমদানি-রপ্তানি হ্রাস করেননি । আয় বেড়েছে ফলে স্থলবন্দরের । তবে প্রতিটি স্থলবন্দরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মীরা কাজ করেছেন । তিনি আর জানান, করোনার সময়ে দেশের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে তুলনামূলক বেশি আমদানি-রপ্তানি হয়েছে । প্রায় সাড়ে ছয় গুণ বেড়েছে ১০ বছরের ব্যবধানে স্থলবন্দর থেকে আয় । আর ২০১০-১১ অর্থবছরে বার্ষিক আয় ছিল ৪১ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্থলবন্দরের আয় শত কোটি টাকা পেরিয়ে যায় । আয় ২০০ কোটি টাকা ছাড়ায় তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ।

আবার ২ লাখ টন ছাড়াল আমদানি-রপ্তানি :
আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ দুই লাখ টন ছাড়াল ,গত অর্থবছরে আবারও স্থলবন্দর দিয়ে । তবে কয়েক বছর ধরেই স্থলপথে দুই লাখ টনের বেশি আমদানি-রপ্তানি হচ্ছিল জানা যায় । তবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মার্চ মাসে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে আমদানি-রপ্তানি কিছুটা শ্লথ হয়েছে । তার ফলে ওই অর্থবছরে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় দেড় লাখ টন । তা আবার বেড়ে ২ লাখ ১২ হাজার টন হয় তবে বিদায়ী অর্থবছরে । তবে এর মধ্যে আমদানি হয় ২ লাখ ১ টন পণ্য । আর রপ্তানি হয় ১১ লাখ টনের মতো পণ্য।

তার ৯৯ শতাংশের বেশি হয় ভারতের সঙ্গে স্থলবন্দর দিয়ে যত পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয় । শুধু মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্য হয় ,টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে । এই বন্দর দিয়ে বছরে এক লাখ টনের মতো পণ্য আসা-যাওয়া করে । তবে বেনাপোল, ভোমরা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ৮৬ শতাংশ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে । তবে বেনাপোল, বুড়িমারী, ভোমরাসহ হাতে গোনা স্থলবন্দর ছাড়া অন্য স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামো খুব উন্নত নয় । আর তাদের আয়ও খুব বেশি নয়।

Leave a Comment