গোসলের মূল উদ্দেশ্যই হলো পবিত্র হওয়া। সেই সঙ্গে শরীরের ময়লা-দুর্গন্ধ দূর হয় এবং সবগুলো স্নায়ু একসঙ্গে সজাগ হয়ে ওঠে। প্রতিদিন গোসলের ফলে আমাদের ত্বক থেকে এক ধরনের তেল নিঃসরিত হয়, যা ত্বককে মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখে।
ইসলামিক জীবন বিধান অনুযায়ী, পরিচ্ছন্নতার দিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হয়। তাই অজুর পাশাপাশি অনেক গোসলও করতে হয়। ইসলামী শরিয়ত মতে গোসলের বিধান সব সময় এক নয়। তা কখনো ফরজ, কখনো সুন্নত আর কখনো নফল বা মুস্তাহাব।
আজ আমরা আলোচনা করবো ফরজ গোসল সম্পর্কে। ফরজ গোসল কখন ও কীভাবে করতে হয়, জেনে নিন-
পাঁচ কারণে গোসল ফরজ হয়
১. স্বামী-স্ত্রী সহবাস করলে কিংবা পুরুষের স্বপ্নদোষ হলে।
২. নারীদের ঋতুস্রাব অথবা পিরিয়ড হলে।
৩. সন্তান প্রসবের পর রক্তপাত বন্ধ হলে।
৪. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেয়া জীবিতদের জন্য।
৫. কোনো অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করলে।
গোসলের ফরজ
গোসলের ফরজ তিনটি। এ গুলোর কোনো একটি ছুটে গেলে ফরজ গোসল আদায় হবে না।
১. কুলি করা।
২. নাকে পানি দেয়া।
৩. পুরো শরীরে পানি পৌঁছানো।
ফরজ গোসল করার নিয়ম
মনে মনে অপবিত্রতা দূর করার নিয়ত করা। তারপর লজ্জাস্থান বা শরীরে লেগে থাকা নাপাকি ধুয়ে ফেলা। তারপর অজু করা। এরপর পানি দিয়ে মাথা ভিজিয়ে প্রথমে শরীরের ডান অংশে এবং পরে বাম অংশে পানি ঢালা। তারপর সারা শরীরে পানি ঢেলে দেওয়া।
হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পুণ্যবতী সহধর্মিণী হজরত মায়মুনা (রা.) বলেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য গোসলের পানি রাখলাম। তা দিয়ে তিনি (জানাবাতের ফরজ) গোসল করলেন। প্রথমে পানি ঢালার পাত্র ডান হাতের ওপর কাৎ করে ডান হাত দুই বা তিনবার ধৌত করলেন। তারপর লজ্জাস্থানের ওপর পানি ঢেলে বাম হাত দিয়ে ধৌত করলেন। পরে মাটির ওপর হাত ঘষে (দুর্গন্ধমুক্ত হওয়ার জন্য) তা পানি দিয়ে ধৌত করলেন। তারপর কুলি করলেন এবং নাক পরিষ্কার করলেন। মুখমণ্ডল ও দুই হাত ধৌত করলেন। এরপর মাথা ও সর্বাঙ্গে পানি ঢাললেন। সবশেষে ওই স্থান থেকে অল্প দূরে সরে গিয়ে উভয় পা ধৌত করলেন।’ (আবু দাউদ : ২৪৫)
মনে রাখতে হবে, গোসলের সময় পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং নারীদের চুল ভালোভাবে ভিজতে হবে। এই নিয়মে গোসলের পর নতুন করে আর ওজুর দরকার নাই, যদি ওজু না ভাঙ্গে।