এস্তেঞ্জা করার আদব।

রাসূলুল্লাহ সল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য পিতৃতুল্য। তোমাদেরকে দ্বীনের যাবতীয় বিষয় শিক্ষা দান করি। যখন তোমাদের কেউ পায়খানায় যাবে সেখানে সে-
♣️ কিবলা সামনে বা পিছন করে বসবে না।
♣️ ডান হাতে এস্তেঞ্জা করবে না। আর
♣️ তিনটি পাথর দ্বারা এস্তেঞ্জা বা শৌচকর্ম করবে। এবং এই কাজে গোবর বা হাড় ব্যবহার করবে না। (আবু দাউদ)

যে ব্যক্তি প্রাকৃতিক (অর্থাৎ পেশাব পায়খানা) প্রয়োজন পূরণ করতে চায় তার নিম্নোক্ত বিষয় গুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত।

১। লোক চক্ষুর আড়ালে বসা, যেন কেউ তাকে দেখতে না পায়, তার থেকে কোনো আওয়াজ শ্রুত না হয় এবং গন্ধ অনুভূত না হয়।

২। প্রয়োজন পূরণের জন্য নরম ও নীচ ভূমি নির্বাচন করা যেন, পেশাবের ছিটা শরীরে বা কাপড়ে না আসে।

৩। শৌচাগারে প্রবেশ করার আগে-
بِسْمِ اللّٰهِ
আল্লাহ্‌র নামে।
اللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْخُبْثِ وَالْخَبَائِثِ

হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অপবিত্র নর জিন্ ও নারী জিন্ থেকে আশ্রয় চাই।

এই দুআ পাঠ করা।

আর যে ব্যক্তি উন্মুক্ত পেশাব পায়খানা করতে চায়, সে তার সতর খোলার পূর্বে কাপড় উঠানোর সময় উক্ত দুআ পাঠ করবে।

৪। বাম পা দিয়ে বাথরুমে প্রবেশ করা এবং ডান পা দিয়ে বের হওয়া।

৫। বাম পায়ের উপর ভর করে বসা। কারণ এ ধরণের বসার ফলে নাপাকি নির্গমন অধিক সহায়ক হয়।

৬। পেশাব পায়খানা ও শৌচকর্মের সময় মাথা ঢেকে রাখা।

৭। গর্তের মুখে পেশাব না করা। কারণ গর্তের ভীতর থেকে বিষাক্ত কীট পতঙ্গ বের হয়ে কষ্ট দিতে পারে।

৮। লোক চলাচলের পথে ও কবরস্থানে পেশাব পায়খানা না করা।

৯। যে স্থানের ছায়ায় মানুষ বসে, সেখানে পেশাব পায়খানা না করা।

১০। পেশাব পায়খানার সময় বিনা প্রয়োজনে কথা বলা মাকরূহ। কিন্তু যদি কোনো অন্ধ লোককে ধাবিত হতে দেখে এবং লোকটি গর্তে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে। এমতাবস্থায় কথা বলে তাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দেওয়া ওয়াজিব হবে।

১১। ফলবান বৃক্ষের নীচে পেশাব পায়খানা না করা।

১২। লোক সমাগমের স্থানে পেশাব পায়খানা না করা।

১৩। পেশাব পায়খানার সময় কুরআন তিলাওয়াত করা ও জিকির করা মাকরূহ।

১৪। শৌচাগারে বা উন্মুক্ত প্রান্তরে যেখানেই হোক, পেশাব পায়খানার সময় কেবলার দিকে মুখ বা পিঠ করে বসা মাকরূহে তাহরীমী।

১৫। স্থির অল্প পানিতে মল মূত্র ত্যাগ করা মাকরূহে তাহরীমী।

১৬। প্রবাহমান পানিতে বা স্থির বেশি পানিতে পেশাব পায়খানা করা মাকরূহে তানযীহী।

১৭। গোসলখানায় পেশাব করা মাকরূহ।

১৮। কূপ, হাউজ, নদীর আশেপাশে পেশাব বা পায়খানা করা মাকরূহ।

১৯। অনাবৃত স্থানে এস্তেঞ্জার জন্য সতর খোলা মাকরূহ।

২০। বিনা প্রয়োজনে ডান হাতে এস্তেঞ্জা করা মাকরূহ।

২১। কোনো ওজর বা অসুবিধা ছাড়া দাঁড়িয়ে পেশাব করা মাকরূহ। কেননা তাতে পেশাবের ছিটা এসে কাপড় বা শরীরে লাগতে পারে।

২২। এস্তেঞ্জার শেষে ডান পা দিয়ে বের হবে। অতঃপর পাঠ করবে-

غُفْرَانَكَ اَ لْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ اَذْهَبَ عَنِّيْ الْاَذٰى وَعَافَانِيْ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট ক্ষমা চাচ্ছি। সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ তা‘আলার জন্য, যিনি আমার থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করে দিয়েছেন এবং আমাকে নিরাপদ করেছেন।

এই সমস্ত ফিকহ প্রদান করেছেন- “হযরত মাওলানা শফীকুর রহমান নাদভী (র:)

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

Leave a Comment