একদিনে দুটি করে ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রাথমিকভাবে যেদিন যেসব শ্রেণির ক্লাস থাকবে সেদিন তাদের দুটি করে ক্লাস নেওয়ার কথা ভাবছে শিক্ষা প্রশাসন। প্রতিদিন সব বিষয়ের ক্লাস হবে না।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, আপাতত সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী যেদিন যেসব শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আসবে, তাদের দুটি করে ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত পর্যায়ে তা সামান্য হেরফেরও হতে পারে।

পরিকল্পনাটি অনুমোদন হলে খুব শিগগির তা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হবে।


করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দেড় বছর ধরে বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরু হবে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, প্রথম দিকে শুধু চলতি বছরের এবং আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস হবে। এর বাইরে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে এক দিন করে ক্লাসে আসবে। তবে শিশু শ্রেণি, নার্সারি ও কেজি শ্রেণির মতো প্রাক্-প্রাথমিক স্তরের শ্রেণিকক্ষের ক্লাস আপাতত বন্ধ থাকবে।

এখন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণি বাদে বাকি শ্রেণিগুলোর ক্লাস সপ্তাহের কোন দিন (বার) হবে, সেটি ঠিক করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন মাউশির একজন পরিচালক।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) মোকাবিলা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি যে একগুচ্ছ পরামর্শ দিয়েছে তার মধ্যে একটি হলো, প্রথম দিকে কম সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখা, যাতে খাবারের জন্য মাস্ক খোলার প্রয়োজন না হয়।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরতে পারবে কি না, তা নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। গত সোমবার পর্যন্ত দেশের ১০ জেলায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক আজ বলেন, চলমান বন্যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যেগুলো এখন একেবারে ব্যবহার করা সম্ভব নয়, সেগুলোতে আপাতত ক্লাস হবে না।। তবে যেগুলো আংশিক ব্যবহার করার মতো আছে, সেগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি চলছে। সরকারের সবশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি আছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই ছুটি আর বাড়ছে না। কিন্তু দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষে সশরীরে পড়াশোনা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত শিখনফল অর্জন করতে পারেনি। অ্যাসাইনমেন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হলেও তা শ্রেণিকক্ষের মতো কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পূরণ করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। শিক্ষাবিদেরা বলছেন, এ ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

Leave a Comment