ঈমানের স্বাদ পাওয়া যায় যে তিন গুণ থাকলে

আল্লাহর মহা নিয়ামত হলো ঈমান । আর যাঁরা পরিপূর্ণ ঈমানদার, তাঁরা এর স্বাদ অনুভব করেন । তবে একজন মুমিনের ঈমানে পূর্ণতার জন্য তাঁর মধ্যে কিছু গুণ থাকা প্রয়োজন । একজন মুমিন ঈমানের স্বাদ পাবেন না যে গুণগুলো না থাকলে । তাঁর মনে প্রশান্তি অনুভূত হবে না। তবে আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ওই ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করেছে, যে রব হিসেবে আল্লাহকে, দ্বিন হিসেবে ইসলামকে এবং রাসুল হিসেবে মুহাম্মাদ (সা.)-কে সন্তুষ্ট চিত্তে স্বীকার করেছে । (মুসলিম, হাদিস : ৫৭)

সে কখনো মুমিন হতে পারবে না যে ব্যক্তি এই তিন জিনিসের ওপর ঈমান আনবে না । আর ঈমানের স্বাদ পাওয়া তো বহু দূরের কথা । তবে রাসুল (সা.) স্বীয় উম্মতদের আরো তিনটি গুণ সম্পর্কে অবহিত করেছেন, যেগুলো কারো মধ্যে পাওয়া গেলে সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে।

১. তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর নিকট অন্য সব কিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া : এটি ঈমানের স্বাদ আস্বাদনের প্রথম শর্ত । আর যার মধ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর ওপর প্রবল বিশ্বাস ও ভালোবাসা থাকবে না, দুনিয়ার সব কিছুর ওপর আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-এর প্রাধান্য দেওয়ার মানসিকতা থাকবে না, সে কখনোই ঈমানের স্বাদ পাবে না। (বুখারি, হাদিস : ৬৯৪১)

তবে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষ অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই। (বুখারি, হাদিস : ১৫)

২. তবে কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালোবাসা : শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পরস্পর ভালোবাসা স্থাপনকারীদের কঠিন কেয়ামতের দিন মহান আল্লাহ আরশের ছায়াতলে স্থান দেবেন । তবে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যেদিন আল্লাহর (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক, ২. সেই যুবক, যার জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের ইবাদতের মধ্যে, ৩. সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে লেগে থাকে ৪. সেই দুই ব্যক্তি যারা পরস্পরকে ভালোবাসে আল্লাহর জন্য, একত্র হয় আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য, ৫. সেই ব্যক্তি যাকে কোনো উচ্চ বংশীয় রূপসী নারী আহ্বান জানায়, কিন্তু সে এই বলে প্রত্যাখ্যান করে যে ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’, ৬. সেই ব্যক্তি যে গোপনে দান করে অথচ তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না, ৭. সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহর জিকির করে, ফলে তার দুই চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে থাকে। (বুখারি, হাদিস : ৬৬০)

৩. তবে কুফরিতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো অপছন্দ করা : একজন মানুষ আগুন নিক্ষিপ্ত হওয়াকে যে পরিমাণ ভয় করে, একজন ঈমানদারের জন্য কুফরিকে এর চেয়ে বেশি ভয় করতে হবে । তবে একজন মুমিন পরিপূর্ণরূপে ঈমানের স্বাদ পাবে। (বুখারি, হাদিস : ১৬)

Leave a Comment