ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত, ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ইবাদত। রমজানের শেষ দশকে অর্থাৎ ২০ রমজানে সূর্যাস্তের আগে ঈদের চাঁদ দেখা যায় বা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা বা ৩০ রমজানের পর ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইতিকাফ করা মুয়াক্কাদাহ কিফায়া। মসজিদ মহল্লায় কয়েকজন বা এক ব্যক্তি থাকলে সবাই দায় থেকে অব্যাহতি পাবে। আর যদি কেউ তা না করে তবে সুন্নতে তারকের জন্য সবাই দায়ী। তবে আদায়ের ক্ষেত্রে যিনি বা যারা পালন করবেন,শুধুমাত্র তিনি বা তারাই সওয়াবের অধিকারী হবেন।
ইতেকাফ কী?
ইতেকাফ কী? ইতেকাফ আরবি শব্দ । এর অর্থ হচ্ছে-অবস্থান করা, স্থির থাকা বা আবদ্ধ থাকা। ইসলামি শরিয়তের ভাষায় রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজান ইফতারের আগে মসজিদ কিংবা নির্ধারিত নির্জন স্থানে অবস্থান গ্রহণ করা। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত, দুনিয়ার সব প্রয়োজন থেকে মুক্ত হয়ে জাগতিক কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে বিছিন্ন হয়ে বিশেষ সময়ে ও বিশেষ নিয়মে শুধু আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেকে আত্মনিয়োগ করাই হলো ইতেকাফ।
ইতিকাফে বসবেন কেন?
ইতিকাফে বসবেন কেন? পরম করুনাময় আল্লাহ তাআলা উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য লাইলাতুল কদর মহিমান্বিত রাত হিসাবে দান করেছেন । যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এই রাত্রী রমজানের শেষ দশকের যে কোনো এক বেজোড় রাতে সংঘঠিত হয়। ইতেকাফকারীরা এ রাতটি পাওয়ার সৌভাগ্য হয়ে থাকেন। ইতিকাফে বসবেন কেন? কেননা আগের সব নবি-রাসুলগণ এবং তাদের উম্মতগণ শত কিংবা হাজার বছর বেঁচেছিলেন। তারা বছরের পর বছর আল্লাহ ইবাদাত-বন্দেগিতে করে কাটাতেন। কিন্তু সে হিসেবে আল্লাহ তাআলা আমাদের অল্প আয়ু বা জীবনকাল দিয়েছেন। তাই আল্লাহর পক্ষ থেকে উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য লাইলাতুল কদর রাত্রী পাওয়া বড় এক নেয়ামত।
ইতিকাফ তিন প্রকার
ইতিকাফ তিন প্রকার , এক. সুন্নাতে ইতিকাফ : রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ। অর্থাৎ ২০ রমজানের সূর্যাস্ত থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ উদিত হওয়া পর্যন্ত মসজিদে অবস্থান করা। এ ধরনের ইতিকাফকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া বলা হয়। গ্রাম বা পাড়ার পক্ষ থেকে এক বা একাধিক ব্যক্তি এ ইতিকাফ করলে সবার পক্ষ থেকে ইতিকাফ করা হবে।
দুই. ওয়াজিব ইতিকাফ: নাজার বা মানতের ইতিকাফ ওয়াজিব। যেমন কেউ বলল যে আমার অমুক কাজ মিটে গেলে আমি এত দিন ইতিকাফ করব বা কাজের কোন শর্ত না বলেই বলেছে, আমি অবশ্যই একদিন ইতিকাফ করব। ইতিকাফ করা ওয়াজিব যতক্ষণ ইতিকাফ করা আছে। রোজা ওয়াজিব ইতিকাফের শর্ত।
তিন. নফল ইতিকাফ : সাধারণভাবে যে কোনো সময় ইতিকাফ করাকে নফল ইতিকাফ বলে। এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা সময় নেই। অল্প সময়ের জন্যও ইতিকাফ করা যায়। তাই মসজিদে প্রবেশের পূর্বে ইতিকাফের নিয়তে প্রবেশ করা উত্তম।
ইতিকাফের বিধিবিধান
ইতিকাফের বিধিবিধান , দুনিয়ার সকল আকর্ষণ থেকে মুক্ত হয়ে, সকল মায়া ত্যাগ করে, সকল বাধা-বিপত্তি ও বন্ধন উপেক্ষা করে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে যাওয়ার নামই ইতিকাফ। ইতিকাফের বিধিবিধান, ‘ইতিকাফ’ অর্থ দাঁড়ানো, বাঁধা, আবদ্ধ হওয়া বা আবদ্ধ হওয়া। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত, ইতিকাফের পরিপ্রেক্ষিতে ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিজেকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে আবদ্ধ করাকে বুঝায়। যে ব্যক্তি ইতিকাফ করে তাকে মুতাকিফ বলে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি ইব্রাহিম ও ইসমাঈলকে নির্দেশ দিয়েছিলাম, আমার ঘরকে তাওয়াফ, ইতিকাফ এবং রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ। (সূরা-২ বাকারা, আয়াত: ১২৫)। আম্মাজান হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। তার মৃত্যুর পরও তার স্ত্রীগণ (বাড়িতে) ইতিকাফ করতেন। (বুখারি ও মুসলিম; আলফিয়াত আল-হাদিস: ৫৪৬, পৃষ্ঠা:১২৯)।
দশ দিনের কম যে কোনো পরিমাণ ইতিকাফ নফল ইতিকাফ বলে গণ্য হবে। নফল ইতিকাফও একটি অত্যন্ত পুণ্যময় নেক কাজ; তাই পূর্ণ সুন্নত ইতিকাফ করা সম্ভব না হলে যথাসম্ভব নফল ইতিকাফ করা জরুরি। ইতিকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য হল শবে কদর অর্জন করা; রমজানের শেষ দশ দিনে ইতিকাফ করলে শবে কদর পাওয়া নিশ্চিত হয়। নফল ইতিকাফ বছরের যেকোনো সময় করা যায়। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত, ইতিকাফের জন্য রোজার শর্ত; কিন্তু ইতিকাফ অল্প সময়ের জন্য (এক দিনের কম) হলে তার জন্য রোজা রাখা শর্ত নয়। নফল ইতিকাফ (রোযা সহ অন্তত একদিন) করা হলে বা শুরু করে ছেড়ে দিলে তা সম্পন্ন করা ওয়াজিব। এর জন্য উপবাস একটি শর্ত এবং এটি একদিন (২৪ ঘন্টা) কমবে না। যে কোনো দিন সূর্যাস্তের আগে থেকে পরের দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত (রোজাসহ) ইতিকাফ করা হলে তা পূর্ণ ইতিকাফের দিন।
ইতিকাফের বিধিবিধান, সাধারণত পুরুষদেরকে মসজিদে ইতিকাফ করতে হয়; মহিলারা নির্দিষ্ট কক্ষে বা নির্দিষ্ট কক্ষে ইতিকাফ করবেন। প্রাকৃতিক প্রয়োজন এবং বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সেই ঘর বা ঘর ছেড়ে যাবেন না। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত, ওযু বা ওযুর জন্য বের হওয়ার সময় কারো সাথে কথা বলবেন না বা সালাম দিবেন না। যদি কেউ তোমাকে সালাম দেয়, তাকে উত্তর দিও না। তবে প্রয়োজনে ওই ঘরের ভেতর থেকে বাইরে থেকে কাউকে ডাকতে পারেন এবং কেউ ভেতরে আসলে তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
যদি কেউ ইতিকাফ করছে না সে ইতিকাফ ঘরে থাকতে পারবে। ইতিকাফের বিধিবিধান, ইতিকাফ কক্ষটি যদি বেডরুম হয় এবং অন্য কেউ একই ঘরে বা একই বিছানায় থাকে তবে তাতে কোন ক্ষতি নেই; এমনকি স্বামীর কাছে থাকতে পারে; তবে ইতিকাফের সময় দাম্পত্য আচরণ নিষিদ্ধ; এতে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবে। ইতিকাফের সময় ইবাদতে ব্যস্ত থাকবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর মসজিদে (বা নির্দিষ্ট স্থানে) ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ো না। (সূরা-২ বাকারা, আয়াত:১৮৭)।
ইতিকাফ অবস্থায় কোন গুনাহ নেই এমন অবস্থায় কথা বলা ও কাজ করা জায়েয। ইতিকাফের বিধিবিধান, প্রয়োজনীয় পারিবারিক কথোপকথন নিষিদ্ধ নয়; কিন্তু অযথা কথা বলা যাবে না। ইতিকাফকারী মসজিদে বা ইতিকাফের স্থানে সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারে এবং মাথা, দাড়ি ও চুলে তেল লাগাতে পারে। আপনি আপনার চুল এবং দাড়িতে একটি চিরুনি ব্যবহার করতে পারেন। (খোলাসাতুল ফিকহ)।
যে ব্যক্তি একটি নিয়মিত কাজ করে বা একটি ভাল কাজ করার নিয়ত করে, যদিও সে কোনো বিশেষ শক্তির কারণে তা করতে অক্ষম হয়, সে তার সওয়াব পাবে। পরিস্থিতির কারণে যদি কেউ মসজিদে ইতিকাফ করতে না পারে তবে একই জায়গায় অবস্থান করলেও বিশেষ সওয়াবের আশা করা যায়।
ইতিকাফ কোথায় করতে হয়?
ইতিকাফ কোথায় করতে হয়? ইতিকাফের সবচেয়ে উত্তম স্থান হলো পবিত্র মসজিদুল হারাম। তারপর মসজিদে নববী। এরপর যথাক্রমে বাইতুল মাকদিস, জুমা আদায়ের মসজিদ ও মহল্লার মসজিদে। নারীরা মসজিদের বদলে ঘরের নির্দিষ্ট নামাজের স্থানে ইতিকাফ করতে পারে।
ইতিকাফ অবস্থায় করণীয়
১. দ্বিনি আলোচনা করা ও শোনা,
২. আল্লাহর জিকির করা,
৩. বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা,
৪. কোরআন তিলাওয়াত করা,
৫. ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করা,
৬. দোয়া করা।
ইতিকাফে যা বর্জনীয়
১. গিবত বা পরনিন্দা করা,
২. ঝগড়াঝাঁটি বা অনর্থক কথাবার্তা বলা,
৩. একেবারেই চুপচাপ বসে থাকা,
৪. মসজিদে মালপত্র এনে বেচাকেনা করা।
যেসব কারণে ইতিকাফ ভেঙে যায়
১. বৈধ প্রয়োজনে বাহিরে বের হয়ে অতিরিক্ত সময় বিলম্ব করা,
২. শরিয়ত অনুমোদিত প্রয়োজন ব্যাতিত মসজিদের বাইরে যাওয়া,
৩. সহবাস করা,
৪. অসুস্থতা বা ভয়ের কারণে মসজিদ হতে বাহির হওয়া।
ইতিকাফ অবস্থায় যেসব কাজ বৈধ
১. ফরজ গোসলের জন্য বাইরে যাওয়া,
২. শৌচকর্ম বা পেশাব-পায়খানার জন্য বাইরে যাওয়া,
৩. মসজিদে পানাহার করা ,
৪. জুমার নামাজের জন্য এতটুকু সময় নিয়ে বের হওয়া,যেন জামে মসজিদে গিয়ে খুতবার পূর্বে দুই/চার রাকাত সুন্নত আদায় করতে পারে,
৫. আজান দেওয়ার জন্য বের হওয়া।
ইতিকাফের কিছু মাসায়েল
ইতিকাফের কিছু মাসায়েল, ইতিকাফ অবস্থায় ইতিকাফকারী ফরজ ইবাদতের বাইরে কোনো নফল ইবাদত না করলেও ইতিকাফের সওয়াব পাবে। তবে অতিরিক্ত নফল ইবাদত করলে অধিক ফজিলত হবে। যেমন পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা, নফল নামায পড়া, কাযা নামায পড়া, নামায পড়া, যিকির করা, তাসবীহ তাহলীল পাঠ করা, যিকির করা এবং তওবা চাওয়া ইত্যাদি। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত , এ ছাড়া দ্বীন ও দ্বীনি জ্ঞান চর্চা করাও সওয়াবের কাজ। যেমন কুরআন, হাদীস, ফিকাহ, তাফসীর ইত্যাদি তেলাওয়াত ও অনুশীলন করা। ইতিকাফের কিছু মাসায়েল নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
ইতিকাফ বিনিময়যোগ্য ইবাদত নয়
ইতিকাফ বিনিময়যোগ্য ইবাদত নয় , ইতিকাফ সংক্রান্ত প্রচলিত ভ্রান্ত শরীয়ত অনুযায়ী, ফি দিয়ে ইতিকাফ করা যাবে না। কোনো কোনো এলাকায় দেখা যায়, রমজানের শেষ ১০ দিনে এলাকার কেউ ইতিকাফ না করলে একজনকে খাবার ও মজুরি দিয়ে ইতিকাফ করানো হয়। কিন্তু এ নিয়ম অনুযায়ী ইতিকাফ করা শুদ্ধ নয়। ইতিকাফ একটি অপরিবর্তনীয় ইবাদত। তাই ইতিকাফের বিনিময় গ্রহণ করা জায়েয নয়। ইতিকাফ একটি ইবাদত,যা বিনিময়যোগ্য নয়। তাই ইতিকাফের জন্য টাকা নেওয়া জায়েয নয়। কেউ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে ইতিকাফ করলে তা সহীহ হবে না। তাই এ ধরনের ইতিকাফ দ্বারা স্থানীয় লোকজনকে দায়িত্ব থেকে মুক্ত করা যাবে না। -ফাতহুল কাদীরঃ ২/৩০৪
অপ্রাপ্তবয়স্কদের ইতিকাফ বৈধ
অপ্রাপ্তবয়স্কদের ইতিকাফ বৈধ। তবে বড়দের ইতিকাফে বসতে হবে। কেননা রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত , হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা গুরুত্বের সঙ্গে পালন করতেন। তাই এ ব্যাপারে উদাসীনতা মোটেও ভালো নয়।-বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৭৪
কোনো অস্থায়ী মসজিদে ইতিকাফ শুদ্ধ হবে না
কোনো অস্থায়ী মসজিদে ইতিকাফ শুদ্ধ হবে না । যেহেতু কোনো অস্থায়ী নামাজ ঘর ‘শরিয়াহ মসজিদ’ নয়, তাই এতে ইতিকাফ বৈধ হবে না। ইতিকাফ বৈধ হওয়ার জন্য ‘স্থায়ী মসজিদ’ থাকা আবশ্যক। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় তাদের (স্ত্রীদের) সাথে শামিল হয়ো না। – সূরা বাকারাঃ 187. ইমাম কুরতুবী (রহঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, মসজিদ ছাড়া অন্য কোন স্থানে ইতিকাফ বৈধ নয়। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া: ৩/৪৪২
নারীর ইতিকাফের জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করা জরুরি
মহিলাদের ইতিকাফ করার জন্য বাড়ির একটি কক্ষকে নামাজের ঘর হিসাবে মনোনীত করতে হবে এবং ইতিকাফের পুরো সময় এই ঘরে থাকতে হবে।-ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/২১১
পুরুষের ইতিকাফ শুদ্ধ হওয়ার জন্য মসজিদ হওয়া জরুরি
ইতিকাফ বৈধ হওয়ার জন্য পুরুষদের জন্য শরীয়ত মসজিদ থাকা আবশ্যক। নামাজের ঘরে ইতিকাফ বৈধ হবে না। তাই ইতিকাফে বসতে হলে মসজিদে বসতে হবে। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত, খাবার নেওয়ার কেউ না থাকলে ইতিকাফ অবস্থায় ঘরে গিয়ে খাবার নেওয়া যায়। তবে খাবার নিয়ে দ্রুত মসজিদে ফিরে যেতে হবে। বাইরে দেরি করা যাবে না। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/২১১
নারী ইতিকাফ শুরুর পর তার স্রাব শুরু হলে করণীয়
নারী ইতিকাফ শুরুর পর তার স্রাব শুরু হলে করণীয় , ঘরে সুন্নত ইতিকাফ শুরুর তিন দিন পর কোনো মহিলার মাসিক শুরু হলে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাবে। যেদিন মাসিক শুরু হয় সেদিনই একদিন ইতিকাফ করা আবশ্যক। এই একদিনের কাযার নিয়ম হলো- সূর্যাস্তের একদিন আগে ইতিকাফ শুরু করতে হবে। পরের দিন রোজা রাখতে হবে। সূর্যাস্তের পর ইতিকাফ শেষ হবে। এভাবে একদিন রোজা রেখে ইতিকাফ করলে কাযা পূর্ণ হবে। পূর্ণ দশদিন ইতিকাফ করা জরুরী নয়। – ফাতাওয়া হিন্দিয়াঃ ১/২০৭
রোজা সুন্নতে ইতিকাফের শর্ত। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রোজা ছাড়া ইতিকাফ হয় না। -সুনানে বায়হাকীঃ ৪/৩১৭
অন্য বর্ণনায়, সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ইতিকাফের জন্য রোজা আবশ্যক। -মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা: ৬/৩০০
ইতিকাফের কাজা আদায়ের পদ্ধতি
ইতিকাফের কাজা আদায়ের পদ্ধতি ,অসুস্থতার কারণে কেউ ইতিকাফে বসে রমজানের শেষ দশক পূর্ণ করতে পারেনি। এমতাবস্থায় তাকে একদিন ইতিকাফ করতে হবে। আর তা রমজানেও হতে পারে। এজন্য একদিন সূর্যাস্ত থেকে পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত মসজিদে ইতিকাফ করবেন। অবশ্য রমজানের বাইরে ইতিকাফ করতে চাইলে দিনের বেলা রোজা রাখতে হবে।-রদ্দুল মুহতার: ২/৪৪৪-৪৪৫
ইতেকাফে বসার নিয়ম ও প্রস্তুতি
ইতেকাফে বসার নিয়ম ও প্রস্তুতি, ২০শে রমজান মোতাবেক ২২শে এপ্রিল ইফতারের আগে রোজাদার মসজিদে অবস্থান করে ইতিকাফে বসবেন। ইতিকাফ কি? রোজা রেখে ইতিকাফে বসবেন কেন? ইতিকাফের শর্ত ও তথ্য কি? ইতিকাফে বসার আগে সে বিষয়গুলো জেনে নেওয়া এবং যথাযথ প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফে বসা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। ইতেকাফে বসার নিয়ম ও প্রস্তুতি, তিনি রমজানের শেষ দশদিন ইবাদত করতেন। লাইলাতুল কদর ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এ দশকে ইতিকাফ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত ইতিকাফ করতেন।
এ কারণেই মুসলিম উম্মাহ লাইলাতুল কদর অর্জনের আশায় রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফে বসে। ইতিকাফে বসা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফে বসবে, তখন নারীদের সাথে সহবাস করো না। ইতেকাফে বসার নিয়ম ও প্রস্তুতি , এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমানা; এর ধারে কাছেও যেও না।’
ইতিকাফের অর্থ হল রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে অবস্থান করা এবং এই দিনগুলোকে আল্লাহর স্মরণে নিয়োজিত করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিনে ইতিকাফ করেছেন। (বুখারী, মুসলিম)।
ইতিকাফের আদব
ইতিকাফের আদব হলো সর্বোপরি পার্থিব কাজকর্ম থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও ইবাদতে মশগুল থাকা। ইতেকাফ কী ? কেন পালন করতে হয় এবং এর ফজিলত , আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে ইতিকাফের বিষয়গুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। বিশেষ করে লাইলাতুল কদরের ফজিলত দান করুন। আমীন।