আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে

চিত্রনায়িকা পরীমনি মাদক নিলে তাকে রিমান্ডে না পাঠিয়ে রিহ্যাবে পাঠিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তার আইনজীবী।

বনানী থানার মাদক আইনের মামলায় চার দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে ওই মামলাতেই আরও পাঁচদিন রিমান্ডে চেয়েছিল পুলিশ।

সিআইডির করা আবেদনের ওপর শুনানিতে এমন যুক্তি দেন এই নায়িকার আইনজীবী আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস দুই দিনের হেফাজতে নিয়ে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

শুনানি শেষে এজলাস থেকে বেরিয়ে লিফটে ওঠার আগে ভিড় করে থাকা উৎসুক জনতাকে উদ্দেশ্য করে পরীমনি বলেন, “আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে।”

রিমান্ড আবেদনের ওপর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর জজ আদালতের পিপি আব্দুল্লাহ আবু ও ও সাজ্জাদুল হক শিহাব।

তাদের যুক্তি উপস্থাপন শেষে পরীমনির আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, মামলার কোনো কাগজে বলা হয়নি যে পরীমনি ‘মাদক ব্যবসায়ী’। আদালতের কাছে মিথ্যা কথা বলব না। যদি উনি মাদক সেবন করেই থাকেন, এবং মাদকের আইটেম যদি তার ঘরে পাওয়াও যায়, তাহলে আইন অনুযায়ী তাকে রিহ্যাবিলিটেশনে পাঠানো হোক, রিমান্ড কেন?

তিনি বলেন, ইওর অনার, আপনি জানেন যে অসুস্থ ব্যক্তি, নারী ও শিশুরা জামিন ও রিমান্ডের ব্যাপারে অনেক সুযোগ পেয়ে থাকেন। পরীমনি তো কোনো ক্যাডার নন। আমরা মামলার কোনো রিমান্ড আবেদন দেখতেই পারিনি। পুলিশ এবং রাষ্ট্রপক্ষ নথির ধারে কাছে যেতে দেয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু তখন বলেন, “আমাদের কাছে তো ফরোয়ার্ডিং ছিল, দেখলেন না কেন?”

পরীমনিকে রিমান্ডে পাঠানোর বিরোধিতা করে আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, “ফোর্বস ম্যাগাজিনে শত শত চিত্রনায়িকার ছবি এবং জীবনী ছাপা হয়েছে, সেখানে পরীমনির নাম আছে। তাকে রিমান্ডে পাঠিয়ে দেশের বিভিন্ন পারপাস সার্ভ করতে হবে-এমনটি কি হওয়া উচিত? এটি যৌক্তিক? এটি কি নৈতিক?”

বিভিন্ন পার্টি আর মাদক চক্রে পরীমনির সংশ্লিষ্টতার যেসব কথা এখন আসছে, সেই প্রসঙ্গ ধরে এই আইনজীবী বলেন, “ঢাকার নবাব বাড়িতে আগে বাইজি রাখা হত, সেখানে মানুষজনকে সুস্থ বিনোদন তারা দিতেন। যদি ইতিহাসে যাই, তাহলে দেখা যায় সেসব বাইজিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হত না।

তিনি বলেন,“বাইজি নায়িকা ললিতা রায় সিনেমা করেছিলেন ‘দ্য লাস্ট কিস’। ঢাকার নবাব বাড়ির অর্থায়নে নির্মিত হয়েছিল। সেখানে দৃশ্যে দৃশ্যে মদ ছিল, সেখানে তো মামলা হয়নি। তাদেরকে মানুষ ভালোবেসেছে।”

তিনি বলেন, “এজাহার অনুযায়ী মাদক মামলায় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, ইয়াবাসহ যা উদ্ধার করার, সবই উদ্ধার করা হয়েছে। তাহলে তাকে বারবার রিমান্ডে নিয়ে কেন হয়রানি করা হচ্ছে?”

শুনানি শেষে বিচারক চার আসামির সবাইকেই বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

Leave a Comment