তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের গত জুনের বেতন ও ঈদ বোনাস ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। তিনি আরও বলেন, ঈদে সরকারি ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে পোশাকসহ সব শিল্পের শ্রমিকদের বদলি ছুটি পাওনা থাকলে সে বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন মালিক ও শ্রমিকপক্ষ।
রাজধানীর বিজয়নগরের শ্রম ভবনে আজ মঙ্গলবার বিকেলে আরএমজি বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) সভায় এসব কথা বলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। এতে মালিক, শ্রমিক ও সরকারপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শ্রম মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী জানান, গণটিকার আওতায় ৩৫ বছর বা তার বেশি বয়সের শ্রমিকদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, গণটিকার আওতায় ৩৫ বছর বা তার বেশি বয়সের শ্রমিকদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ৩৫ বছরের কম বয়স্ক শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টিকার ব্যবস্থা করা হবে।
বেগম মন্নুজান সুফিয়ান আরও বলেন, সরকার ঈদে মানুষের যাতায়াত, কোরবানির পশুর কেনাবেচা নির্বিঘ্ন করতে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। গাদাগাদি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল না করতে শ্রমিকদের পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, কষ্ট করে হলেও মাস্ক পরুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। এতে আপনি নিরাপদে থাকবেন, আপনার পরিবার–পরিজন নিরাপদ থাকবে। দেশও নিরাপদে থাকবে।
করোনার ঝুঁকির মধ্যেও শ্রমিকেরা কাজ করছেন। সে জন্য আমরা শ্রমিকদের ঝুঁকিভাতা দেওয়ার দাবি করেছি। তবে মালিকপক্ষ বলছেন, তাদের ব্যবসা এখনো আগের জায়গায় যায়নি।
সভায় উপস্থিত পোশাকশিল্পের মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা জানান, ইতিমধ্যে প্রায় শতভাগ কারখানার শ্রমিকেরা গত জুন মাসের বেতন পেয়েছেন।
জানতে চাইলে শ্রমিকনেতা সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, করোনার ঝুঁকির মধ্যেও শ্রমিকেরা কাজ করছেন। সে জন্য আমরা শ্রমিকদের ঝুঁকিভাতা দেওয়ার দাবি করেছি। তবে মালিকপক্ষ বলছেন, তাদের ব্যবসা এখনো আগের জায়গায় যায়নি। ফলে এখনই ঝুঁকিভাতা দেওয়ার মতো আর্থিক অবস্থা তাদের নেই। এ ছাড়া যত দ্রুত সম্ভব শ্রমিকদের টিকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।
সভায় সাংসদ ও শ্রমিকনেতা শাহজাহান খান, শ্রমসচিব কে এম আবদুস সালাম, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের (ডিআইএফই) মহাপরিদর্শক মো. নাসির উদ্দীন আহমেদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গৌতম কুমার, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, বিজিএমইএর সহসভাপতি মো. নাছির উদ্দিন, বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান, শ্রমিকনেতা নাজমা আক্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।