স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লজ্জা-শরম বলতে কিছু নেই: ফখরুল

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ‘লজ্জা-শরম বলতে কিছু নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিয়ে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রবিবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কী নির্লজ্জ একজন ব্যক্তি যে, পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে তার দলের লোকেরা কথা বলছেন, বিরোধী দলের কয়েকজন কথা বলেছেন, সারাদেশের মানুষ কথা বলছেন।’

‘তার মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে। দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে ছবি তোলা হয়েছে অ্যাগ্রিমেন্ট সই করার সময়ে। তারপরেও তিনি পদত্যাগ করছেন না। লজ্জা-শরম কোনো জিনিস আছে বলে মনে হয় না’ যোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার চরম দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এই করোনাভাইরাসে যখন মানুষের জীবন চলে যাচ্ছে, আপনি দেখুন তখন স্বাস্থ্য খাতে কীরূপ দুর্নীতি চলছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে বলছিলাম- জেলার হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করা হোক, অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করা হোক, ওষুধের ব্যবস্থা করা হোক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শতকরা ৫২টি হাসপাতালে কোনো আইসিইউ বেড নেই। ….একটা জেলা হাসপাতালে পর্যন্ত কোনো অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেই।’

এ সময় গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণমাধ্যমে এতটুকু সরকারের সমালোচনা করলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে চরম নির্যাতন করা হচ্ছে। গত ৬ মাসে ১৫০ জনের মতো সাংবাদিককে তাদের শুধুমাত্র সত্য কথা লেখার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, এখনকার সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্র না থাকলে গণমাধ্যমও ভালো থাকে না। সাংবাদিকরা আজ ভালো নেই। তারা খুব কষ্টের মধ্যে কাজ করছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের রক্ত ঝরেছে। মাহমুদুর রহমান, যায়যায়দিন সম্পাদক শফিক রেহমানসহ অনেক সাংবাদিককে দেশ ত্যাগ করতে হয়েছে। ৪২ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন বর্তমান সরকারের আমলে।

তিনি বলেন, ‘বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজিসহ অনেকে কারাগারে আছেন। আবুল আসাদের মতো প্রবীণ সাংবাদিককেও তারা শুধু জেলে পুরেনি, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করেছে। এটা ফ্যাসিজমের নিয়ম। প্রথমে তারা রাজনীতিকদের ধরেছে, এরপর এখন সাংবাদিকসহ ভিন্নমত দমন শুরু করেছে।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) উদ্যোগে ‘মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: গণমাধ্যমের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম।

সভায় ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে/একাংশ) সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বর্তমান সভাপতি এম আবদুল্লাহ, কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, বাসির জামাল, রাশেদুল হক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Leave a Comment

betvisa