সন্তানহারা বাবা বললেন, আল্লাহ করবেন তাদের বিচার

কাবুলে মার্কিন ড্রোন হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কাউকে সাজা না দেওয়ার ব্যাপারে দেশটির সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এক আফগান ভুক্তভোগী। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই আফগান ভুক্তভোগীর নাম আইমল আহমাদি (৩২)। মার্কিন ড্রোন হামলার ঘটনায় তিনি তাঁর তিন বছর বয়সী মেয়ে মালেকাসহ ১০ স্বজন হারিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ আইমল তাঁর সন্তানসহ স্বজন হত্যার বিচারের ভার স্রষ্টার কাছে দেন। তিনি বলেন, আল্লাহ বিচার করবেন।

আইমলের কাছে এএফপি জানতে চায়, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে তিনি রাগান্বিত কি না। জবাবে আইমল বলেন, ‘অবশ্যই…যুক্তরাষ্ট্র যদি একটি শিশুকে হারাত, তাহলে তাদের প্রতিক্রিয়া কী হতো?’

আইমল বলেন, ‘আমরা শুধু গণমাধ্যমে শুনেছি যে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) দুঃখিত।’ ভুক্তভোগী পরিবারটির স্বজনেরা আগে বলেছিলেন, তাঁরা চান, মার্কিন কর্মকর্তা সশরীর তাঁদের সামনে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করুক।

আইমল জানান, এখন তাঁর এক মেয়ে বেঁচে আছে। সাত বছর বয়সী মেয়েটির নাম আদ্দা। সে তার ছোট বোন মালেকার অনুপস্থিতি খুব অনুভব করে।

বিজ্ঞাপন

ড্রোন হামলায় কয়েক দিন আগে আইমলকে তাঁর মেয়ে মালেকা বলেছিল, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ মেয়ের এ কথা এখনো আইমলের কানে বাজে।

কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রাক্কালে গত ২৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যদের অবস্থান সন্দেহে কাবুলে একটি গাড়িতে ড্রোন হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এতে তিন প্রাপ্তবয়স্ক ও সাত শিশু নিহত হয়। এ হামলাকে পরে ভুল হিসেবে স্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্র।

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কারবি জানান, কাবুলে মার্কিন ড্রোন হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সেনাসদস্য বা কর্মকর্তাকে সাজা পেতে হবে না। ড্রোন হামলার ঘটনার একটি উচ্চপর্যায়ের পর্যালোচনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের হাতে পৌঁছেছে। সেখানে এ হামলার জন্য কোনো জবাবদিহির সুপারিশ করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে আফগানিস্তানের তালেবান সরকার। এ প্রসঙ্গে তালেবানের মুখপাত্র বিলাল করিমি বলেন, যদি ন্যায়বিচার বলে কিছু থাকে, যদি মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদার প্রতি কোনো শ্রদ্ধাবোধ থাকে, তাহলে ড্রোন হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের দায়িত্ব।

Leave a Comment

betvisa