মাংসাশী পিঁপড়ে এবং তাদের অদ্ভূত কর্মকাণ্ড।
মাংসাশী পিঁপড়ে কোথায় বাস করে?
অবিশ্বাস্য হলেও এক ধরণের ভয়ঙ্কর পিঁপড়ের অস্তিত্ব লক্ষিত হয় আফ্রিলায়, বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার গভীর জঙ্গলে। তারা যাযাবর জাতীয় প্রাণী। এক জায়গায় দীর্ঘদিন থাকা যেন তাদের প্রকৃতি বিরুদ্ধ। আসলে কোনো এক জায়গায় কিছুদিন থাকার পর খাদ্যাভাব দেখা দিলে লক্ষ লক্ষ পিঁপড়ে মিছিল করে চলে অন্য কোথাও খাদ্যের খোঁজে। মাইলের পর মাইল জায়গা জুড়ে তারা খাদ্যান্বাসের অভিযান চালায়। চলে যায় তাদের কবলে। তখন কোনো জন্তু জানোয়ার বা মানুষ তাদের সামনে পড়লে আর রেহাই নেই, মৃত্যু অবধারিত।
হোক মানুষ, বাঘ কিংবা হাতি সবই তাদের কাছে সমান। তারা কাউকেই পরোয়া করে না। সাঁড়াশীর নখ চারদিকে ঘিরে ধরে এমন আক্রমণ চালায় তখন অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। তারপর শিকার করা মানুষ বা জানোয়ারের মাংসে মহা আনন্দে উদরপূর্তি করে খেয়ে যাবে। হাড় কয়টা ছাড়া রক্ত, মাংস, মজ্জা এমন কি চামড়া পর্যন্ত উদরস্থ করে তবেই ছাড়বে সেই রাক্ষুসে পিঁপড়ের দল।
এমন ভয়ঙ্কর প্রকৃতির পিঁপড়ের আক্রমণ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য আজকের বিজ্ঞান যুগের মানুষও হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। কোনো বুদ্ধি কিংবা কৌশলই তাদের কাছে খাটছে না। কামান, বন্দুক অথবা যেকোন অগ্নেয়াস্ত্র এদের বিরুদ্ধে অচল। এবার রইল আগুন। এতেও হতাশ হতে হয়। আগুণ জ্বেলে দিলে হতচ্ছাড়া পিঁপড়েগুলি ঝাঁকে ঝাঁকে আগুনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে আগুনকে নিভিয়ে দেয়। পানিও এদের কিছুই করতে পারে না। পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতার কেটে চলে যায় শিকারের কাছে।
রাক্ষুসে পিঁপড়ে গুলোকে দেখামাত্রই জঙ্গলের গণ্ডার, হাতি, জিরাফ, হায়েনা এমনকি বাঘ ও সিংহ পর্যন্ত লেজ তুলে উদ্ভ্রান্তের মত ছোটাছুটি শুরু করে দেয়। ফেরোমেন নাম এক প্রকার তরল পদার্থ তারা শুঁড় দিয়ে মাটিতে লাগাতে লাগাতে এগিয়ে যায়। আর তারই গন্ধ অনুসরণ করে হিংস্র অভিযানে চলে মাংসাশী পিঁপড়ের দল।
রিপোর্টার: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।