বেশিরভাগ সমালোচনার জবাব দেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বেশিরভাগ সমালোচনায় চুপ ছিলেন ‍স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

  

সোমবার জাতীয় সংসদে সম্পূরক বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেন।

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, কেনাকাটায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো। কীভাবে এ মন্ত্রণালয়ের সংস্কার করবেন, তা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সুস্পষ্টভাবে জানাতে হবে। স্বাস্থ্য খাত নিয়ে কথা বলতে বলতে বেহাল হয়ে গেছি। স্বাস্থ্য বিভাগকে সংস্কারের আওতায় আনতে হবে। বেহাল দশা থেকে রক্ষা করতে কমিটি গঠন করতে হবে।

বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, জিডিপির অন্তত পাঁচ শতাংশ এই খাতে বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় সব দেশে বরাদ্দ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। করোনাকালে ভারত স্বাস্থ্যখাতে আগের বছরের তুলনায় ১৩৭ শতাংশ বেশি বরাদ্দ দিয়েছে। বাংলাদেশে বেড়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। করোনাকালেও বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। যেটুকু বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাও ব্যবহার হয়নি।

১০ মাসে স্বাস্থ্যখাতে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা- এডিপির মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এখন আবার নতুন বরাদ্দ চাইছে। কেন ৭৫ শতাংশ অব্যবহৃত রয়ে গেছে তার জবাব স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দিতে হবে।

বিএনপির সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গলা চিপে ধরে হেনস্তা করেছেন, এটা হতে পারে না।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আপনি একজন সজ্জন ব্যক্তি। আপনার বাবা আমার সাথে মন্ত্রী ছিলেন। আপনাকে আমি চিনি। অত্যন্ত ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে আপনি। কিন্তু আপনারতো কর্তৃত্ব নেই, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যা হচ্ছে!

তিনি বলেন, হাসপাতালে অক্সিজেন নেই। এখন দরকার অক্সিজেন। সেটা না এনে আনা হচ্ছে এমআরআই, সিটিস্ক্যান মেশিন। পাঠানো হচ্ছে  উপজেলায়। তারা সব সাজিয়ে রেখে দিয়েছে। চালাতে পারে না। সংসদ সদস্যদের সমালোচনার জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ওষুধের কোনো ঘাটতি হয়নি। অক্সিজেনের অভাব কখনোই হয়নি। আমেরিকায় যে চিকিৎসা এখানেও একই চিকিৎসা হয়েছে।

টিকাদান কার্যক্রম চলমান আছে এবং আরো টিকা কিনতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব কারণে মৃত্যুর হার দেড় শতাংশ। পৃথিবীতে এই হার আড়াই শতাংশ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া টিকা সরবরাহ করতে পারছে না। চীন, রাশিয়া, আমেরিকা থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চুক্তিও হয়েছে।

তিনি বলেন, মহামারীতে সরকারির হাসপাতালে প্রতিটি ব্যক্তির জন্য সাধারণ শয্যায় চিকিৎসা নিতে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। যারা আইসিইউতে ছিল তাদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে সরকারের পক্ষ থেকে খরচ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ খুবই সফলতা দেখিয়েছে। এ কারণে জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক আছে।

Leave a Comment

betvisa