বিষাদ বৃষ্টি কবিতাটি এক বিষাদময় দৃশ্যকে তুলে ধরে, যেখানে প্রকৃতি ও মানুষের জীবনযাত্রার কঠিন বাস্তবতা পরস্পরের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। বিষাদের দমকা হাওয়ায় আকাশের কান্না বৃষ্টি হয়ে নামে, যা একজোড়া পাখির ছোট্ট নীড় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আশ্রয়হীন পাখিরা অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখে তাদের স্বপ্নের বাসা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, শহরের বিলাসী মানুষরা এই বৃষ্টিতে আনন্দে মেতে ওঠে, কিন্তু রাস্তার ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা এক পথশিশু হাতে কদম ফুল নিয়ে ভাবছে—আজকের দিনটা তার কেমন যাবে? একমুঠো ভাতের জন্য সে অপেক্ষা করছে, অথচ শহরের মানুষগুলোর হৃদয় কঠিন কনক্রিটের মতো। কবিতাটি সমাজের বৈষম্য, প্রকৃতির নীরব কান্না এবং জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে অত্যন্ত গভীরভাবে তুলে ধরে।
দেয়ালের ওপারে বন্দী স্মৃতির আর্তনাদেও মন আজ স্রোতহীন নদীর মতোই শান্ত।
বিষাদের দমকা হাওয়ায় ছাইরঙা
মেঘের ছটফটানি সহ্য করতে না পেরে
আকাশের বুকভাঙ্গা রোদন বেরিয়ে এলো।
ভিজিয়ে দিল একজোড়া পাখির
খড়কুটোয় বাঁধা ছোট্ট একটি নীড়।
বাসাহীন পাখি দু’টো শরীর ভিজিয়েই
দেখতে লাগলো তাদের স্বপ্নের মতো বাসাটি
ভেঙ্গে যাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে তাদের
অতীতে রাঙ্গানো সব স্মৃতিচিহ্ন।
ঝুম বৃষ্টিতে কিছু বিলাসী মানব-মানবী
বৃষ্টি বিলাসব্যসনে মেতে উঠেছে।
রাস্তার ওপারে একটি পথ শিশু
হাতে একগুচ্ছ কদম ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে।
ফুল বিক্রির টাকায় এক বেলা
এক মুঠো ভাত খাবার আশায়।
না থাকুক কোনো ব্যঞ্জন,
খানিকটা নুন আর কয়েকটা লঙ্কা
হলেও বেশ চলে যেত।
পোয়া খানেক চাল একটু লবণ
আর দু চারটে মরিচ কেনার
মতো টাকাটা আজ জুটবে তো তার?
বাচ্চা ছেলেটা এখনও বুঝতে পারছে না,
এই ইট পাথরের শহুরে মানুষের মন
এবং মানুষগুলি কতটা কনক্রিট।
Writer:Mahazabin Sharmin Priya