আফগানিস্তানে তালেবানের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নারীদের অধিকারের দাবিতে কিছু নারী অধিকারকর্মী বিক্ষোভ করেছেন। আফগান সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় তাঁদের হাতে থাকা ব্যানার-প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘বিশ্ব কেন নীরবে আমাদের মরতে দেখছে’।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত আগস্টে ক্ষমতা দখলের পর তালেবান সব ধরনের বিক্ষোভ-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রায় ১২ জন নারী অধিকারকর্মী তালেবানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে নারীর ‘শিক্ষার অধিকার’, ‘কাজের অধিকার’-এর দাবিতে ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ করেন। কাবুলে ওই নারীরা যখন ব্যানার নিয়ে সামনের দিকে এগোতে শুরু করেন, তখন তালেবানের সশস্ত্র সদস্যরা তাঁদের বাধা দেন।
আফগানিস্তানের নারী অধিকার রক্ষার সংগঠন স্পনটেনিয়াস মুভমেন্ট অব উইমেন অ্যাকটিভিস্টের আয়োজকদের একজন ওয়াহিদা আমিরি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের মহাসচিবকে আমাদের অধিকার, শিক্ষা, কাজের পক্ষে সমর্থন দিতে আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আজ সবকিছু থেকে বঞ্চিত।’
আফগানিস্তানের ‘রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি’ তুলে ধরতে দেশটির জাতিসংঘ মিশনের (ইউএনএএমএ) কাছে নারী অধিকারকর্মীদের ওই বিক্ষোভটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিক্ষোভটি কাবুলের কূটনৈতিক এলাকা হিসেবে পরিচিত ‘গ্রিন জোনে’ করা হয়। ওই এলাকায় কিছু পশ্চিমা দেশের দূতাবাস রয়েছে।
যদিও তালেবান ক্ষমতা দখলের পর অনেক দেশ তাদের দূতাবাস গুঁটিয়ে নিয়েছে।
তবে তালেবানের সশস্ত্র সদস্যরা গ্রিন জোনের প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়ে ওই বিক্ষোভকারী নারী অধিকারকর্মী ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সরে যেতে বলেন। এ সময় এএফপির একজন সাংবাদিক দেখেন, এক ডজনের মতো তালেবানের সশস্ত্র সদস্য সাংবাদিকদের জোরপূর্বক সেখান থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। ওই ঘটনার ভিডিও ধারণের সময় স্থানীয় একজন সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়।
নারী অধিকারকর্মী ওয়াহিদা আমিরি বলেন, ‘আমরা তালেবানের বিরুদ্ধে কিছুই করিনি। আমরা শুধু শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভটি করতে চেয়েছি।’
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে নারীদের মাধ্যমে ‘প্রতীকী বিক্ষোভ’ নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। তালেবান এখনো নারীদের কাজে ফেরার বা বেশির ভাগ মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।
গত বৃহস্পতিবার প্রায় ২০ জন নারীকে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই সমাবেশের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া কয়েকজন বিদেশি ও স্থানীয় সাংবাদিকদের মারধর করেন তালেবান সদস্যরা।