বিধবা ভাতার আবেদন করতে গিয়ে অজিফা জানলেন তিনি ‘মৃত’

অজিফা বেগমের (৬১) স্বামী মারা গেছেন দুই দশক আগে। বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছেন দুই ছেলে। জীবিকা নির্বাহ করতে না পেরে অজিফা গিয়েছিলেন বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করতে। কিন্তু ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারেন, ভোটার তালিকায় তিনি অনেক আগেই ‘মারা’ গেছেন।

অজিফার বাড়ি বরগুনার আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর টেপুরা গ্রামে। ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ হিসেবে উল্লেখ থাকায় এখন তিনি বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করতে পারছেন না।

স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অজিফা বেগমের (৬১) স্বামী এছব সিকদার ২০ বছর আগে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর অজিফা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে দুই ছেলেকে বড় করে তোলেন। ছেলেরা বিয়ে করে অন্যত্র চলে যাওয়ায় অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছেন অজিফা। বয়সের ভারে এখন আর অন্যের বাড়িতে কাজ করতে পারছেন না। বিধবা ভাতায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে মঙ্গলবার হলদিয়া ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে অনলাইনে আবেদন করতে যান। আবেদন করতে গিয়ে দেখেন, ভোটার তালিকায় অজিফা বেগম মৃত।

অজিফা বেগম বলেন, গরিবেরা এমনভাবেই সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয়। ভাতার টাকার জন্য আবেদন করতে গিয়ে জানতে পারেন, তিনি অনেক বছর আগে মারা গেছেন। মারা যাওয়ার আগেই তো তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে। ছেলেরা তাঁকে খাওয়ান না। এখন কীভাবে দিন কাটাবেন, সেই দুশ্চিন্তায় আছেন।

হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, অজিফা বেগম জীবিত। ভোটার তালিকায় তাঁকে মৃত দেখানো হচ্ছে, এটা খুবই দুঃখজনক। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁর ভোটার তালিকা সংশোধন করা না গেলে তিনি বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবে না। আবেদন করতে না পারলে একজন দরিদ্র অজিফা তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। তিনি আশা করছেন নির্বাচন অফিস দায়িত্ব নিয়ে ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভুলটি সংশোধন করে দেবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, জীবিত অজিফাকে ভোটার তালিকায় মৃত দেখানো, এটা হয়তো ভুলক্রমে হয়েছে। অজিফার জীবিত থাকার প্রমাণসহ আবেদন করলে অল্প সময়ের মধ্যে সংশোধন করে দেওয়া হবে।

Leave a Comment

betvisa