পঙ্গপাল ধ্বংসে লেসার বিম।
পঙ্গপাল দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয় এবং খাদ্যাভাব সৃষ্টি করে। সবুজ শস্য ক্ষেতের ওপর কোটি কোটি পঙ্গপাল ঝাঁক বেঁধে হানা দেয় কচি পাতাই কেবল নয়, কচি কচি ডাঁটাগুলো পর্যন্ত খেয়ে ফেলে এবং গাছকে ধ্বংস করে দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এক একটি দলে নামে কয়েক কোটি পঙ্গপাল। যে যে এলাকার ওপর দিয়ে তারা যাতায়াত করে সেসব এলাকায় শস্য বলে আর কিছু থাকে না। আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে তাদের উপদ্রব বেশি। তাদের দৌরাত্ম্যে হাজার হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার ফসল মাত্র একদিনে নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে।
পঙ্গপালের উপদ্রবের হাত থেকে শস্যকে রক্ষা করা এবং তাদের ধ্বংস করার জন্য কৃষি-বিজ্ঞানীরা দিনের পর দিন গবেষণায় লিপ্ত থেকেও তেমন কোনো কার্যকরী কৌশল উদ্ভাবন করতে সক্ষম হচ্ছেন না। তারপর আমেরিকা এবং সোভিয়েত রাশিয়ার দু’জন কৃতী বিজ্ঞানী দীর্ঘ পনের বছর ধরে লেসারের সাহায্যে কীভাবে পঙ্গপালকে ধ্বংস করা যায়, তা নিয়ে নিরলস গবেষণায় লিপ্ত। বর্ণালী-বীক্ষণ প্রক্রিয়ার জন্য ও বিশেষজ্ঞ ভলাদিলেম এস. ল্যাটোকভংকে মস্কোয় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আরিজোল বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. পিটার এ ফ্ল্যাঙ্কেম। তাঁকে আমন্ত্রণের উদ্দেশ্য, লেসারকে কীভাবে পঙ্গপাল ধ্বংসের কাজে ব্যবহার করা যায় এ নিয়ে গবেষণার জন্য। দীর্ঘ আলোচনা, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তাঁরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, পঙ্গপাল আক্রমণ অভিযানকে লেসারের সাহায্যে অবশ্যই প্রতিহত করা যেতে পারে। তাদের দৌরাত্ম্যের হাত থেকে শস্যকে রক্ষা করা সম্ভব।
ড. পিটার ফ্রাঙ্কেম এবং ভলাদিলেম এস ল্যাটোন কভ্ এর আবিষ্কৃত পদ্ধতিকে কাজে লাগাতে গিয়ে পঙ্গপাল যখন শস্য ক্ষেত্রে হামলা চালাচ্ছে, তখন উঁচুতে উড়ন্ত ইউ-২ বায়ুযান থেকে এদের নিশ্চিহ্ন করে মানুষের বসবাস থেকে দূরে কোন হেলিকপ্টার থেকে পঙ্গপালের ঝাঁকের ওপর লেসার বিম ফেলে তাদের ঝলসে দেয়া সম্ভব হচ্ছে।
এই ধ্বংস কার্যের ফলে পরিবেশ দূষণের বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা থাকে না। বরং মৃত পঙ্গপাল পঁচে গিয়ে জমির সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটা বাড়তি লাভ বলে গণ্য হতে পারে।
রিপোর্টার: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া