দেশে-বিদেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও দেশে-বিদেশে সপ্তাহটি পালিত হচ্ছে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে। এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো, ‘ওমেন ইন স্পেস’ বা ‘মহাকাশে নারী’।
প্রতিবছর ৪ থেকে ১০ অক্টোবর বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ। এটি বিশ্বের বৃহত্তম মহাকাশ ইভেন্ট। ২০১৯ সালের তথ্যানুসারে, এ উপলক্ষে পৃথিবীর ৯৬টি দেশে ৮ হাজারের বেশি আয়োজন হয়েছে। বিভিন্ন মহাকাশ সংস্থা, জ্যোতির্বিজ্ঞান ক্লাব, জাদুঘরসহ ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠান এ আয়োজনগুলো করে। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ ৪-১০ অক্টোবরকে বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং বার্ষিক আয়োজন হিসেবে উদ্যাপন করার কথা জানায়। সেই থেকে প্রতিবছর এ সপ্তাহ পালিত হয়ে আসছে। এ ইভেন্টটি আয়োজন করে মূলত বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ সংস্থা এবং জাতিসংঘের আউটার স্পেস অ্যাফেয়ার্স অফিস।
বাংলাদেশে এ উপলক্ষে কেবল একটি আয়োজনই হয়েছে। ‘তারাদের গান’ নামে তারা দেখার এ আয়োজনটি করে ভ্রমি নামের একটি সংগঠন। ৮ অক্টোবর, শুক্রবার রাতে ঢাকায় ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে চলে তাদের এ আয়োজন। ভ্রমির এ আয়োজনের সঙ্গে ম্যাগাজিন পার্টনার হিসেবে ছিল মাসিক বিজ্ঞানচিন্তা।
এ ছাড়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নানা আয়োজন। কিছু উল্লেখযোগ্য আয়োজন হলো—
যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যের হান্টসভিল শহরে অবস্থিত ইউএস স্পেস অ্যান্ড রকেট সেন্টার আয়োজন—দিনব্যাপী নানা প্রতিযোগিতা ও গিভঅ্যাওয়ে। তবে তাদের মূল আয়োজন হলো, ‘বিভিন্ন মিশনে নারী’। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে নাসায় কর্মরত ও সংশ্লিষ্ট নারীদের কৃতিত্ব নিয়ে এ আয়োজন।
১২তম বার্ষিক মহাকাশ ফাউন্ডেশন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে স্পেস ফাউন্ডেশন। এটি একটি অলাভজনক সংস্থা, মহাকাশসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আয়োজন ও শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে কাজ করে। প্রতিযোগিতাটি নিয়ে বিস্তারিত জানা যাবে এ লিংকে: art.spacefoundation.org/।
যুক্তরাষ্ট্রের সার্চ ফর এক্সট্রাটেরেট্রিয়াল ইন্টেলিজেন্স (সেটি) ইনস্টিটিউট, ইউনিস্টেলার এবং দ্য প্লানেটারি সোসাইটি কিছু ভার্চ্যুয়াল ইভেন্ট, পর্যবেক্ষণ চ্যালেঞ্জ ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজন করবে। এর মধ্যে আছে নারী মহাকাশবিজ্ঞানীদের নিয়ে আরও জানার জন্য ভার্চ্যুয়াল ইভেন্ট, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা আয়োজন করে ‘জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে ১০০ ঘণ্টা’।
ভারতের সোসাইটি ফর স্পেস এডুকেশন রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সার্ড) দুই সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজন করে। ওয়েবিনার, ওয়ার্কশপ এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তারা। ওয়েবিনার ও অন্যান্য আয়োজন নিয়ে বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন এই লিংকে: outreach.sserd.org/।
ইউরোপিয়ান স্পেস এডুকেশন রিসোর্স অফিস (ইএসইআরও) পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য, নরওয়েসহ বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের আয়োজন করে।
জাতিসংঘের আউটার স্পেস অ্যাফেয়ার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে এ উপলক্ষে। এই ক্যাম্পেইনের সবটা জুড়ে আছে এবারের প্রতিপাদ্য, ‘মহাকাশে নারী’। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে: space4women.unoosa.org।
এ ছাড়া দেশ-বিদেশের নানা প্রতিষ্ঠান আরও অনেক আয়োজন করেছে। এসব অনুষ্ঠানের খোঁজ পাওয়া যাবে বিশ্ব মহাকাশ সংস্থার ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইট লিংক: www.worldspaceweek.org।
এ আয়োজনের মাধ্যমে মহাকাশ গবেষণা, মিশন ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং বিজ্ঞানে লিঙ্গসমতা আরও বাড়বে বলে আশা করছে বিশ্ব মহাকাশ সংস্থা। পাশাপাশি আরও বেশি কিশোরী এ ক্ষেত্রে আগ্রহী হবে, এমনটাই তাদের প্রত্যাশা।