নার্ভ গ্যাস যুদ্ধ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে কেন?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ প্রাচীন যুদ্ধ ব্যবস্থাকে বাতিল করে যুদ্ধের পদ্ধতির আমুল পরিবর্তন ঘটানো হয়েছিল। এ যুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্রকে প্রথম সরাসরি ব্যবহার করা হয়।
ক্ষমতা লোভী, পরদেশ ও পরবিত্ত লোভীদের সাহায্যার্থে তখন এগিয়ে এসেছিলেন বিষশাস্ত্রে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা। তাঁরা তাঁদের দীর্ঘ গবেষণার ফসল তুলে দিয়েছিলেন যুদ্ধোন্মাদদের হাতে। আর তারা নির্দ্বিধায় তা প্রয়োগ করলেন শত্রু পক্ষের দেশের ওপর। ফলে এক লক্ষেরও বেশি অসহায় নিরপরাধ মানুষ মারা গিয়েছিল, বিভিন্ন ভাবে পঙ্গুত্ব লাভ করেছিল কম করেও দশ লক্ষ নর-নারী। ২য় বিশ্ব যুদ্ধে যে রাসায়নিক মরণাস্ত্র তৈরি করা হয়েছিল তা অর্গানো ফসফরাস যৌগ দিয়ে তৈরি। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত এর নাম ছিল রাসায়নিক অস্ত্র ‘নার্ভ গ্যাস’।
নার্ভ গ্যাস মূলত অর্গানো ফসফরাস গোত্রীয় ফসফোনেটস যৌগ বিশেষ। ২য় বিশ্ব যুদ্ধের হত্যা লীলা প্রত্যক্ষ করে পৃথিবীর শান্তিকামী জনতা চমকে উঠেছিল। তারই প্রতিফলন দেখা যায় ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে। সে বছর জেনেভা প্রটোকল অনুযায়ী এই রাসায়নিক যৌগ সম্বলিত অস্ত্র তৈরির কাজে মন দেয়। ভিয়েতনামের যুদ্ধে (১৯৬০- ১৯৭০) এর ধ্বংস লীলা পৃথিবীবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। তাতে যে ‘এজেন্ট-অরেঞ্জ’ নামক বোমা ব্যবহার করা হয়েছে তাতে ভিয়েতনামের খাদ্যশস্য এমনকি মাঝারি আকৃতির গাছ-গাছালি পযন্ত মরে যায়।
এ অস্ত্র ২৪ ডাই ক্লোরোফেলেক্সি অ্যাসেটিক এসিড এবং ২৪৫ ফেনেক্সি অ্যাসিটিক এডিসের মিশ্রণের তৈরি। এর ব্যবহারে বয়ষ্ক নারী এবং পুরুষ মারা যায়নি সত্য, কিন্তু অগণিত নবজাতক শিশু বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ে।
নার্ভ গ্যাসের এই ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে বিশ্বের শান্তিকামি মানুষ এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দেয়। এর পর থেকে আর নার্ভ গ্যাসের ব্যবহার হয়নি।
মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।