কুমেরুতে স্তন্যপায়ী প্রাণী বাস করে না কেন?

কুমেরুতে স্তন্যপায়ী প্রাণী বাস করে না কেন?

কুমেরু দেশটি আমাদের দীর্ঘদিনের পরিচিত। সেখানকার এস্কিমোদের জীবনযাত্রা এবং সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে কুকুর এবং বর্গা হরিণের টানা স্লেজ গাড়ি এবং অতিকায় সব প্রাণীদের কথা অল্পবিস্তর অনেক আগে থেকেই জানি আমরা।

বিভিন্ন অভিযাত্রী দল তাদের অভিযানের সারগর্ভ অমূল্য ভ্রমণ বৃত্তান্ত আমাদের উপহার দিয়েছেন তা-ই তাদের সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান লাভের মাধ্যম। কিন্তু সুমেরু? মহাদেশ হিসেবে অ্যান্টার্কটিকা বা কুমেরু এখনো আমাদের কাছে আজও তেমন পরিচিত হয়ে উঠতে পারেনি।

এখানে কুমেরু থেকে অনেক পুরু বরফের আস্তরণে দেশটি আগাগোড়া ঢাকা। গোলাকার সে দেশে ধরতে গেলে উদ্ভিদ ও প্রাণী বিরল। পৃথিবীর বারোটি দেশের যেসব বৈজ্ঞানিক ও গবেষক প্রচুর শৈত্য অগ্রাহ্য করে নিরলস গবেষণায় লিপ্ত তাঁরা ছিটেফোঁটা যেসব তথ্য পাঠিয়েছেন তা-ই আমাদের একমাত্র সম্বল।

বরফে মোড়া দেশটির আয়তন ৫৫ লক্ষ বর্গমাইল। আবার তা সমতলে মোটেই নয়। এখানে ওখানে ছড়িয়ে রয়েছে খানা- ডোবা। জলীয়বাষ্প এখানে অনুপস্থিত। আবহাওয়াও শুষ্ক।

ছিটেফোঁটা যা বৃষ্টিপাত হয় তার বার্ষিক গড়ে ৫০ মিলিমিটার। গ্রীষ্মে উপকূল ভূমিতে যেটুকু গরম পরে তাতে কিছু বরফ গলে সত্য। তখন ন্যাড়া পাথর বেরিয়ে পড়ে। তখন শ্যাওলার পাতলা আস্তরণ চোখে পড়ে। কুমেরু বিন্দুর কাছাকাছি জায়গায় তখনও বরফের ঘনত্ব সাড়ে সাত থেকে আট হাজার ফুট।

বালির রাজ্য মরুভূমিতে যেমন মরুদ্যান দেখা যায়, তেমনি কুমেরুতে চোখে পড়ে মরুদ্যান। এদের ওয়েসিস বলা হয়। ম্যাকমুরডো ওয়েসিস বৃহত্তম এর দাবিদার। এখানে এলে মানুষের দৃষ্টিশক্তি যেন প্রকটতর হয়ে ওঠে। গবেষকদের মতে, এখানে দৃষ্টি বহুদূর প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হয় অর্থাৎ প্রায় সাড়ে চারশ মাইল দূরবর্তী বরফে পাহাড়ের চূড়াও যেন ছবির মত চোখের সামনে ভেসে ওঠে।

শুষ্ক এবং ধুলিবিহীন আবহাওয়ার জন্য এরকম অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে। সুমেরুতে এস্কিমো উপজাতির বাস। কিন্তু এখানে মনুষ্য বসতি মোটেই নেই। অস্বাভাবিক ঠান্ডাই এখানকার পরিবেশকে মনুষ্য বসবাসের অনুপযোগী করে তুলেছে। কেবলমাত্র মানুষই বা বলি কেন? কোন স্তন্যপায়ী প্রাণীর দেখা এখানে পাওয়া যায় না। আবার সরীসৃপ গোষ্ঠীর বা উভচর গোষ্ঠীর কোন প্রাণীর অস্তিত্ব এখানে কল্পনা করা যায় না।

স্থলচর জীবদের মধ্যে কেবলমাত্র এক বিশেষ ধরনের ডানা বিহীন মাছের দেখা পাওয়া যায়। লাল রংয়ের চিংড়ি আর ছোট ছোট মাছ জলচর জীবের মধ্যে এখানকার বাসিন্দা। তবে মেরু সাগরের ধারে স্কুয়া আর পেঙ্গুইন চোখে পড়ে। আর সাগরের প্রানীর মধ্যে বেলুন আর সিল প্রভৃতি দেখা যায়।

তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

By মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

My name is Mahazabin Sharmin Priya, and I am an author who studied Mathematics at the National University. I have a deep passion for writing in various genres, including Islam, technology, and mathematics. With my knowledge and expertise, I strive to provide insightful and engaging content to readers in these areas.

Related Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *