শারীরিক নানা অসুস্থতা নিয়ে কিছুদিন পরপর কারাগার থেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যান দেশের আলোচিত এমএলএম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের এমডি রফিকুল আমিন। গত এপ্রিল মাসে ডায়াবেটিসের সমস্যার কারণ দেখিয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
তবে, দেশের আলোচিত এই ব্যক্তি কাগজে কলমে অসুস্থ হলেও হাসপাতালে ভর্তি হন নিজের ব্যবসা পরিচালনা করতে। চিকিৎসার নামে হাসপাতালের কক্ষকে বানিয়ে ফেলেন নিজের প্রাইভেট চেম্বার। মোবাইল-ইন্টারনেটসহ সকল সাধারণ সেবা ব্যবহার করে তিনি জুম অ্যাপে ব্যাবসায়িক মিটিং-ও করেছেন।
বার্তা বাজার তার জুম মিটিং করার একটি ভিডিও পেয়েছে। গত ২৮ জুন রাতের ওই ভিডিওটিতে তিনি ডেসটিনির মত আরও একটি এমএলএম ব্যবসা নিয়ে পরিকল্পনা করছিলেন। ইতোমধ্যে ব্যবসাটা তিনি শুরুও করেছেন। এজন্য খুব শীঘ্রই তিনি ১৩০০ মার্কেটিং এজেন্ট নিয়োগ দিতে যাচ্ছেন।
মিস্টার এ নামে রেজিস্টার করা জুম আইডিতে ছবি ব্যবহার করেছেন ইংরেজি বড় হাতের বর্ণ ‘আর’। মিটিং চলাকালে তার নিয়ন্ত্রণাধীন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথেও তিনি কথা বলেন।
তখন নতুন ব্যবসায় দ্রুত উন্নতি না হওয়ায় তিনি জানান, কেরানীগঞ্জে (কারাগারে) যাওয়ার কারণে সেই কাজটা পিছিয়ে গেছে। জেলে থেকে কোরআন-হাদিসের অনেক জ্ঞান নিয়েছি।
জানা যায়, কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন রফিকুল আমিন। ডায়াবেটিসের সমস্যাকে কারণ দেখিয়ে গত এপ্রিলে তিনি ভর্তি হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। হাসপাতালে চিকিৎসকের অধীনে থাকলেও তার নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় কারাগারের দু’জন রক্ষী সবসময় দায়িত্ব পালন করেন।
কারাগারের তত্ত্বাবধানে থেকেও তিনি কিভাবে মোবাইল ও ইন্টারনেট চালান এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুব আলম বলেন, ডায়াবেটিসসহ বেশ কয়েকটি রোগের কারণে তাকে আমরা হাসপাতালে পাঠাই। বর্তমানে তিনি কী কারণে হাসপাতালে আছেন, সেটা তার চিকিৎসকরা বলতে পারবেন। এ বিষয়ে আপনারা বিএসএমএমইউয়ের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি আমাকে এ বিষয়ে আরেকজন জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তার কাছে ফোন গেছে কী করে… এটা তো হওয়ার কথা নয়। আমি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) অফিসে গিয়ে দেখব কীভাবে, কী হচ্ছে। আমাদের কাছে এমন একটা তথ্য আগেও এসেছিল। এরপর আমরা যে ব্যবস্থা নিয়েছি তাতে মোবাইলে কথা বলার সুযোগ নাই। আগামীকাল গিয়ে আবারও বিষয়টি দেখব।
প্রসঙ্গত, কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসেনের নামে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই মামলা দায়ের করে দুদক। একই বছরের ৩১ অক্টোবর তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। একাধিকবার জামিন চেয়েও না পেয়ে একটি মামলায় ৩ বছরের সাজাসহ বেশ কিছু মামলায় কারাবন্দি আছেন রফিকুল আমিন।