উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কে সীমান্ত পরিদর্শনের নির্দেশ

উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কে সীমান্ত পরিদর্শনের নির্দেশ

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতাগ্রহনের পর থেকে দক্ষিন সীমান্ত পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। স্থানীয় সংবাদপত্রের প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে, প্রতিদিন ৩ থেকে ৫ হাজার অভিবাসী সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। এ নিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বিরোধীদলীয় নেতাদের পাশাপাশি ডেমোক্রেটিক দলের সিনেটররাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে নব্য প্রেসিডেন্ট জরুরী ভিত্তিতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরেজমিনে সীমান্ত পরিদর্শন করে তাকে বিস্তারিত তথ্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

ধারনা করা হচ্ছে, জো বাইডেনের অভিবাসীবান্ধব নীতি অবলম্বনের জন্য এমনটা ঘটছে। নির্বাচনী প্রচারণাকালে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দায়িত্ব নেবার পর কংগ্রেসে বিল উপস্থাপন করবেন যাতে ১ কোটি ১০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ প্রশস্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতা গ্রহনের কিছু দিনের মধ্যে গত ২রা ফেব্রুয়ারিতে ৩টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এ দিন তিনি দাবী করেন ন্যায্য, সুষ্ঠু, মানবিক ও আইনী অভিবাসন ব্যবস্থার মাধ্যমে আমেরিকা অধিকতর নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধশালী হয়ে ওঠবে।

ইতিপূর্বে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তরুন অভিবাসীদের জন্য ‘ডিফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড এরাইভালস’ (ডাকা) প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন। যার লক্ষ্য ছিল শিশু বয়সে যারা কোনও বৈধ কাগজ ছাড়া অভিবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া। পরবর্তীতে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা কালে এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেন। নব্য প্রেসিডেন্ট উক্ত প্রকল্প পুনরায় চালুকরণ সহ এর সুবিধার পরিসর বৃদ্ধিকরণের পরিকল্পনা নিয়েছেন। এরই ধারা অনুসারে নতুন নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থা পূনর্গঠন করে অভিবাসীদের স্বাগত জানানো, পরিবারের সাথে একত্রে থাকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অবদান রাখতে উৎসাহিত করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য কাগজপত্র ছাড়া অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র হতে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া ১০০দিনের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তার এ নির্দেশের পিছনে সুনির্দিষ্ট ও যৌক্তিক কারন দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় উক্ত নির্দেশটির বিপক্ষে রায় দেয় টেক্সাসের ফেডারেল আদালত। তবে এ রায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিবাসীবান্ধব আমেরিকা গড়ার অগ্রযাত্রার পথে বাধা হতে পারেনি।

তবে এরপর পরই বেড়ে যায় সীমানে অভিবাসীদের তৎপরতা। প্রতিদিন হাজার হাজার অনুপ্রবেশকারী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রেফতার করেও পরিস্থিতি সামলাতে পাচ্ছে না সীমান্তরক্ষীরা- উপরন্তু গ্রেফতারকৃত অভিবাসীদের রাখার স্থান সংকটে পরছেন তারা। সীমান্তে অভিবাসীদের অবৈধ প্রবেশের তৎপরতা উদ্বিগ্ন করে তুলছে সবাইকে। এ বিষয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, সুনামির মতো লোকজন প্রবেশ করছে সীমান্ত দিয়ে। পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি নাজুক হওয়ার পূর্বেই বর্তমান প্রেসিডেন্টকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এদিকে ডেমোক্রেটিক পার্টির টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সিনেটর জোয়ান চুই বলেছেন, তিনি মনে করেন, সীমান্তে ঠিক কি ঘটছে তা জানা নেই বাইডেন প্রশাসনের। বিরোধী দল ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের চাপে বাইডেনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য জরুরী উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ভেডেন্ট প্যাটেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কে জরুরিভাবে সীমান্ত পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। কর্মকর্তারা স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে সীমান্ত পরিদর্শন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরবেন জো বাইডেনের নিকট। বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, অভিবাসীদের সংগে আসা শিশুদের নিরাপত্তাসহ অন্যান্য পদক্ষেপের ব্যাপারে কর্মকর্তারা প্রেসিডেন্টের নিকট সুপারিশ করবেন।

বর্তমান প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারীর পক্ষ থেকে দ্রুততার সাথে সব পদক্ষেপ গ্রহন করে সীমান্তে অভিবাসীদের সামাল দেওয়ার তৎপরতার দাবি করা হয়েছে। তবে তা প্রেসিডেন্টের বিতর্কিত অভিবাসন সংস্কার আইন পাশের পরিকল্পনা কতটা সফল করতে পারবে তা ভবিষ্যতে জানতে পারা যাবে।

Reporter: Nanjiba Naowar

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *