গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করাসহ নানা অভিযোগে ইভ্যালির বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্তে উঠে আসা আর্থিক অনিয়মগুলো তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকেও (দুদক) পৃথক চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইভ্যালি ডটকমের চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬.১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকি গ্রাহক এবং মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধ করা ওই কম্পানির পক্ষে সম্ভব নয়।
এ ছাড়া গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে নেওয়া ৩৩৮.৬২ কোটি টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।’
এদিকে মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) যৌথ আয়োজনে সদ্য প্রকাশিত ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জুম অনলাইনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সদ্যোঘোষিত ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা বিক্রেতা ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। এই নির্দেশিকা প্রতিপালনের মাধ্যমে ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে। ইভ্যালির বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা রংপুর ডেইলীকে বলেন, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের স্বার্থ রক্ষায় ইভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে আগাম নেওয়া ৩৩৮ কোটি টাকা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলার আশঙ্কায় এই ই-কমার্স কম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে গত ৪ জুলাই এ চিঠি দেওয়া হয়। গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭.১৮ কোটি টাকা।
গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম বাবদ ২১৩.৯৪ কোটি টাকা এবং মার্চেন্টদের কাছ থেকে ১৮৯.৮৫ কোটি টাকার মালপত্র বাকিতে গ্রহণের পর স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৩.৮০ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬৫.১৭ কোটি টাকা।
এর মধ্যে অন্তত পাঁচটি ব্যাংক ইভ্যালিসহ ১১টি ই-কমার্স কম্পানির সঙ্গে কার্ডে লেনদেন থেকে গ্রাহকদের বিরত থাকতে বলেছে।