ইন্দ্রজালের কল্লোল” কবিতাটি এক গভীর অনুভূতির জগতকে তুলে ধরে, যেখানে প্রকৃতি, নীরবতা ও অতীত স্মৃতি একসঙ্গে মিশে গেছে।
কবি অন্ধকার নদীর তীরে বসে স্রোতের কথোপকথন শুনতে চায়, বাতাসের এলোমেলো শব্দে হারিয়ে যেতে চায়। নক্ষত্রখচিত আকাশের নিচে, মেঘের দীর্ঘশ্বাস পাশ কাটিয়ে একফালি চাঁদ উঁকি দেয়, আর তার স্নিগ্ধ আলোয় সৃষ্টি হয় এক রহস্যময় নীরবতা যা শুধুই এক ইন্দ্রজালের কল্লোল।
কবিতার শেষাংশে, অতীতের কষ্টময় স্মৃতি জেগে ওঠে। বিষাদের অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া একদিনের কথা মনে পড়ে, যেখানে হতাশার বিরুদ্ধে আত্মার এক নিঃশব্দ আন্দোলন চলছিল। বিষাদের সূর্য অস্ত যেতে পারছিল না, কারণ অতৃপ্ত আত্মারা পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে ছিল।
এই কবিতাটি স্মৃতি, নৈঃশব্দ্য ও এক অদ্ভুত আবেগের মিশ্রণে গঠিত, যা পাঠককে এক রহস্যময় ও অনুভূতিপূর্ণ জগতে নিয়ে যায়।
কলকলে বয়ে চলা
অন্ধকার নদীর তীরে
নিশ্চুপ বসে থেকে
আমি শুনতে চাই,
স্রোতের কথোপকথন।
এলোমেলো বাতাসও সঙ্গী হোক,
কানে কানে বলে যাক
না বলা শত কথার সারাংশ।
আমি মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে শুনে যাবো,
আর সহাস্য মুখে প্রশ্রয় দিবো
ওদের অভিযুক্ত সংলাপে।
নকশাকাটা তারায় ভরা রাতে,
সর্বশান্ত ধূসর মেঘের
দীর্ঘনিশ্বাসকে পাশ কাটিয়ে
উঁকি দিবে একফালি চাঁদ।
শান্ত শশীর স্নিগ্ধ আলোয়
গোটা ধরণীতে বিরাজ করবে
এক নৈসর্গিক নীরবতা।
যে নীরবতায় কোনো ছন্দ নেই,
নেই কোনো তান।
আছে শুধু ইন্দ্রজালের কল্লোল।
মনে পড়ে নতুন করে সেদিনের কথা,
দু’চোখ রাঙ্গিয়েছিলাম যেদিন
কষ্টের কালো কাজলে,
নৈরাশ্যের রাজপথে দেখেছিলাম
তিক্ত হতাশার বিরুদ্ধে
অতৃপ্ত আত্মার আন্দোলন।
বিষাদের অস্তিমিত সূর্য
থেমে ছিল; অস্ত যেতে পারছিলো না।
অস্তাচলের সড়ক রোধ করে ছিল
অদৃশ্য অতৃপ্ত আত্মারা।
আমি এখনো ভুলিনি
বিষ্ময়মাখা সেই দিনটির কথা।
এখনো ভুলিনি!
Writer: Mahazabin Sharmin Priya