ইচ্ছের নেই যত্ন

ইচ্ছের নেই যত্ন

ইচ্ছের নেই যত্ন পারমিতা ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিল।
মা বললেন- ইঞ্জিনিয়ারিং কি মেয়েদের জন্য বাপু?তার চেয়ে তুই ডাক্তার হ;গাইনীর ডাক্তার।

রাজীব হতে চেয়েছিল নৃত্যশিল্পী।
বাবা বললেন- এক ঘর লোকের সামনে মেয়েদের মত ধেইধেই করে নাচলে এক চড়ে সবকটা দাঁত ফেলে দেব।

মাতিন চাকমার স্বপ্ন ছিল সাংবাদিক হবে।তার সম্প্রদায়ের মানুষের কথাগুলো পৌঁছে দেবে গোটা দেশের কানে।
ছোট মামা বলেছেন- ওসব হয়ে কী লাভ? সরকারি চাকরির চেষ্টা করো।কোঠা আছে;হয়েও যেতে পারে।

রাতুল ভেবেছিল থিয়েটার করবে।
রং মেখে সং সেজে ওসব থিয়েটার মিয়েটার করলে আমার বাড়িতে তোমার জায়গা হবেনা- শেষ কথা শুনিয়ে দিলেন দাদু।

তপনের শখ ফটোগ্রাফি।চোখের লেন্সে যা ধরা পড়েনা তা ক্যামেরার লেন্সবন্দী করার কি অদ্ভুত ক্ষমতা তার!
বাড়ির লোক বললো- ওসবে কি ইনকাম আছে? বাপ দাদার ব্যবসায় মন দাও।দুটো পয়সা আসবে তাতে।

মনীষ লিখতে ভালোবাসে।একটা বই বের করার শখ তার বরাবরই।
তাতে প্রায়ই বড়মা উপহাস করে বলেন- আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এলেন রে! প্রণাম কর তোরা সব।

আচ্ছা, এমন কেন গো তোমরা?
দাওনা দেখতে স্বপ্ন
এমন কেন গো তোমরা?
ইচ্ছের নেই যত্ন।
আকাশকে চায় যেই পাখিটা
খাঁচায় রাখো তাকে
উড়তেই যদি না পারে তো
কেমনে সে আর থাকে?
সব বাগানে একই ফুল
কেন তোমরা খোঁজো?
সব মাটিতে একই ফসল
হয়না- এটা বোঝো?
এমন কেন গো তোমরা?
শেকল দিয়ে বাঁধো
শেষে যখন তারা খসে
তখন কেন কাঁদো?

কলমে- দীপা সিকদার জ্যোতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *