গুরুতর অসুস্থ হয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম লন্ডনের বার্থ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এনজিওগ্রামে তার হার্টে অনেকগুলো ‘ব্লক’ ধরা পড়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে তার ‘ওপেন হার্ট সার্জারি’ করা হবে।
শনিবার (১৯ জুন) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফেসবুকে লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে সিদ্দিকী নাজমুল আলমের স্বাস্থ্য বিষয়ে অবহিত করেছি। তিনি তার দ্রুত আরোগ্য লাভ হবে বলে প্রত্যাশা করেছেন এবং তাকে চিন্তা করতে মানা করেছেন। তার খোঁজ রাখার জন্যও বলেছেন।’
এর আগে শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্টে সিদ্দিকী নাজমুল আলম জানান, এনজিওগ্রামে তার হার্টে অনেকগুলো ‘ব্লক’ ধরা পড়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে তার ‘ওপেন হার্ট সার্জারি’ করা হবে। বর্তমানে লন্ডনের বার্থ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে রোগীর পোশাকে দুইটি ছবি যুক্ত করে ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, সবাই আমাকে আল্লাহর ওয়াস্তে ক্ষমা করে দিয়েন। বাঁচবো কি না জানি না, তবে এই চরম মুহূর্তে কিছু সত্য কথা বলে যাই।
আমি রাজনীতিটা একমাত্র দেশরত্ন শেখ হাসিনারে মেনেই করতাম এবং করি। কোনোদিন তার বাইরে যাইনি। সাবেক অনেক বড় ভাইদের কথায় আমি কখনও চলি নাই, বরং পেছনের সারির অনেককে নেতা বানাইছি নিজের ইচ্ছায়। আর প্রেম করেছিলাম, কিন্তু মানিয়ে নিতে পারিনি। তাই বিয়ে হয়নি।
আর শেষ কথা হলো বাংলাদেশে কোন ব্যাংকে আমার নামে এক পয়সাও লোন নাই এবং লোনের কোনো টাকা বিদেশেও নিয়ে আসিনি। তদবির ঠিকাদারি দালালি পদ বাণিজ্য কখনও করিনি।
লন্ডনে গায়ে খাঁটি জীবনে যে কাজ করিনি, তা করে জীবনযুদ্ধে লিপ্ত ছিলাম। কিন্তু আমার কপাল ভালো না। কিছুক্ষণ আগেই আমার এনজিওগ্রাম সম্পন্ন হয়েছে অনেকগুলো ব্লক ধরা পড়েছে। ওপেন হার্ট সার্জারি করতে হবে। হয়তোবা আজকালের মধ্যেই করবে।
সরকারি হাসপাতালেই করবে। কারণ এই দেশে চিকিৎসা ফ্রি তাই আর কেউ কষ্ট কইরা ভূল তথ্য দিয়েন না যে, কোটি টাকার অপারেশন। যদি মরে যাই একটাই কষ্ট থাকবে নিজের দলের মানুষের প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে মিডিয়া ট্রায়াল হয়েছে বারবার আমার নামে। আর আফছোছ হয়তোবা বড় কোনো ভাই আমার নামে অনেক মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার নেত্রীর কান ভারি করে রেখেছে। সেই ভূলগুলো হয়তো ভাঙিয়ে যেতে পারলাম না।
আপা, আপনিই আমার মমতাময়ী জননী স্নেহময়ী ভগিনী। আপনাকে অনেক ভালোবাসি ক্ষমা করে দিয়েন আমাকে। সবাই ভালো থাকবেন। আপনাদের আর যন্ত্রণা দিবো না।
উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন সিদ্দিকী নাজমুল আলম। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের দায়িত্ব পালনকালে তিনি ‘অবৈধভাবে বিপুল সম্পদের’ মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালেই তিনি বেশ কয়েকটি দেশে নিয়মিত ভ্রমণ করতেন। ওইসব দেশে তিনি বিভিন্ন ব্যবসায় জড়িয়ে যান বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এছাড়া প্রেম-বিয়ে, বিভিন্ন সময় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হুমকি, আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি ছিলেন ছাত্ররাজনীতির আলোচিত চরিত্র।