“ঐ লোকটি এত পাপাচার করার পরও যখন যা চাচ্ছে আল্লাহ তাকে তা-ই দিচ্ছেন। তার সম্পদের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, আরো বেড়ে যাচ্ছে সম্মান, যশ, খ্যাতিসহ সবকিছু।”
আমাদের মনে এসব ভাবনা উঁকি দিতে পারে প্রায়শই। কারণ আমাদের আশেপাশে এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত-ই কম নয়।
আমরা জানি লোকটা পাপী, তবুও আল্লাহ তাকে খুব ভালো রেখেছেন। শাস্তির বদৌলতে তাকে ঐশ্বর্যে ভরে দিচ্ছেন। তবে কি দুনিয়াতে সে তার অপকর্মের কোনো সাজাই পাবে না? এমনি এমনিই সে পার পেয়ে যাবে?
সবর বন্ধু, সবর! সে তো তার পাপের শাস্তিই পাচ্ছে। যা হয়তো আপনার, আমার এবং ঐ ব্যক্তিটির চোখে অদৃশ্যমান।
তবে আমরা একটু চিন্তা করলেই আমাদের অভ্যন্তরীণ সকল প্রশ্নের উত্তর পাব। চলুন, চিন্তা করা যাক।
তার আগে “রাসূলের চোখে দুনিয়া” বইটি থেকে ৬৩ নং এর একটি হাদিস জেনে আসি, কেমন?
উকবা ইবনু আমির (রদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, নবি মুহাম্মাদ ﷺ বলেছেন,
“যখন তুমি দেখবে আল্লাহ তা’আলা কোনো ব্যক্তিকে তার পাপাচার সত্ত্বেও পার্থিব জীবনে তার প্রিয় বস্তুগুলো দিচ্ছেন, তখন বুঝবে- তা হলো তাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য একটি টোপমাত্র।”
তারপর তিনি আল্লাহ তা’আলার এ বক্তব্য পাঠ করেন,
فَلَمَّا نَسُوۡا مَا ذُکِّرُوۡا بِہٖ فَتَحۡنَا عَلَیۡہِمۡ اَبۡوَابَ کُلِّ شَیۡءٍ ؕ حَتّٰۤی اِذَا فَرِحُوۡا بِمَاۤ اُوۡتُوۡۤا اَخَذۡنٰہُمۡ بَغۡتَۃً فَاِذَا ہُمۡ مُّبۡلِسُوۡنَ ﴿۴۴﴾
অতঃপর তাদেরকে যা কিছু উপদেশ ও নাসীহাত করা হয়েছিল তা যখন তারা ভুলে গেল তখন আমি সুখ শান্তির জন্য প্রতিটি বস্তুর দরজা উন্মুক্ত করে দিলাম। যখন তারা তাদেরকে দানকৃত বস্তু লাভ করে খুব আনন্দিত ও উল্লসিত হল তখন হঠাৎ একদিন আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম, আর তারা সেই অবস্থায় নিরাশ হয়ে পড়ল।
[সূরা আল-আনআম ৬: ৪৪]
এবার আপনার মনের উদিত হওয়া প্রশ্নটির উত্তর পেয়ে গেছেন নিশ্চয়ই?
হ্যাঁ, পাবার-ই কথা। কেননা, আপনার মননে যে প্রশ্নটি ছিল, সেটা নিয়ে আল্লাহ কুরআনে একটি আয়াত সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর প্রিয় নবীও ﷺ একটি অত্যন্ত ন্যায়সঙ্গত উক্তি করেছেন। এর চেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য আরো হতে পারে কি, বলুন?
এবার আপনার পালা। আপনি চিন্তা করুন কিভাবে আল্লাহ তাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। তাদের থেকে কিভাবে আপনি শিক্ষা নিতে পারেন সেটিও চিন্তা করুন। তবেই আপনি নিজেকে শুধরাতে পারবেন, আরো পারবেন ইস্তেগফার করে আপনার রবের নিকট ফিরে আসতে। আপনার জন্য শুভ কামনা, বন্ধু।
লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া