ময়মনসিংহের গৌরীপুরে নবম শ্রেণির ছাত্রী হালিমা আক্তারকে আত্মহত্যার প্ররোচণার অভিযোগে মঙ্গলবার (৮ জুন) মামলা দায়ের করেছেন তার বাবা আব্দুল কাদির। মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন গৌরীপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তদন্ত কাজ ও আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়নের কালিবাড়ী এলাকার মৃত রুস্তুম আলীর পুত্র আব্দুল কাদির জানান, তার মেয়ে হালিমা খাতুনকে দুই বছর পূর্বে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে নানা কু-প্রস্তাব দিয়ে মো. সুলতান মিয়া জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়।
সুলতান একই ইউনিয়নের গড়পাড়া গ্রামের মহর উদ্দিনের পুত্র। পেশায় হ্যান্ডট্রলি চালক। এ ঘটনায় গৌরীপুর থানায় এসে অভিযোগ দেয়ার পর পুলিশের সহযোগিতায় ২১দিন পর মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে আমার মেয়েকে নানাভাবে সুলতান উত্ত্যক্ত করে আসছিলো।
রোববার (৬ জুন) বিকালে আমার মেয়েকে দরগা ঈদগাহ মাঠ এলাকায় নিয়ে যায় সুলতান। সুলতান আমার মেয়েকে মারপিটও করে। এক পর্যায়ে সেখানে ইঁদুরনাশক খেয়ে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে যায়। গৌরীপুর হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সোমবার সন্ধ্যায় দাফন কার্য সম্পন্ন হয়।
এদিকে হালিমা মৃত্যুর পূর্বে সুলতানকে উদ্দেশ্য করে দু’টো প্রেমপত্র লিখে যান। একটি পত্রে প্রিয় সুলতানকে উদ্দেশ্যে করে লেখা হয়েছে ‘ আমার অভিশাপ থেকে তোমাকে মুক্তি দিলাম। মন থেকে তোমাকে দেই নাই বিশ্বাস কর। তুমি সবাইকে নিয়ে ভালো থেকো। আর কোনো মেয়ের জীবন নিয়ে প্রেমের অভিনয় করো না। তোমার সামনে যেন আমার মৃত্যু হয়, কিন্তু হলো না। আমার সব স্মৃতি পুড়ে ফেলো।’
অপরপত্রে লিখে আছে ‘আমার আগের চিঠি টা বুঝতে পারছ কি-না। জানি তোমার কষ্ট হচ্ছে সবকিছু স্বপ্ন মনে হচ্ছে, তাই না! কাল দেখা হলো, আর আজ আমি দুনিয়া ছাড়া। কিন্তু বিশ্বাস করো সবকিছু পাঁচ মিনিটে উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। সুলতান আমার একটা কথা রেখো কয়েকদিন পর বিয়ে করে নিও। আমি বলছি তুমি সুখি হবে সে তোমাকে বুঝবে জানবে আমি জানি আমারে ভুলে যেতে কষ্ট হবে তোমার। তবু বলি ভুলে যেও। পত্রের শেষাংশে লেখা রয়েছে ‘তোমার জন্য নিজের জীবন ত্যাগ করলাম।’