ভাইরাস সর্বদা পরিবর্তিত হয় এবং মিউটেশনের ফলে ভাইরাস একটি নতুন রূপ বা স্ট্রেইন তৈরি করতে পারে। এই স্ট্রেইনগুলো বিভিন্নভাবে অ্যাক্ট করে যা মূল ভাইরাস থেকে ভিন্ন হয়। এভাবেই তৈরি হয় ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট।
বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা কোভিড ১৯ ভাইরাসের বিভিন্ন পরিবর্তন ট্র্যাক করে চলছে।এই গবেষণা মূলত কোন কোভিড ভ্যারিয়েন্ট কত বেশি বিপদজনক, কত দ্রুত ছড়ায়, কীভাবে মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং বিভিন্ন ভ্যাকসিনগুলি তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে কার্যকর হতে পারে তা বুঝতে সাহায্য করে।
বিশ্বজুড়ে কোভিডের হাজার হাজার বিভিন্ন রূপ রয়েছে। ভাইরাসগুলি সর্বদা পরিবর্তিত হচ্ছে এবং সর্বাধিক পরিবর্তন যে হবেই তা অনিবার্য। পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ভ্যারিয়েন্টগুলো এই রোগটিকে আরও সংক্রামক বা হুমকিস্বরূপ করে তুলে।
যেই পরিবর্তনগুলো সর্বাধিক সম্ভাব্য যাদের তাদের উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট বলা হয়। সারা বিশ্বে এরকম ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে মোট পাঁচ ধরণের।
- ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (B.1.617.2)- এই ভ্যারিয়েন্টটি 3,000 টিরও বেশি কেস যুক্তরাজ্য জুড়ে দেখা গেছে।
- যুক্তরাজ্য বা কেন্টের ভ্যারিয়েন্ট (B.1.17)- ব্রিটেনে এই ভ্যারিয়েন্টের 200,000 এরও বেশি কেস চিহ্নিত হয়েছে এবং 50 টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং আবারও এর পরিবর্তন ঘটছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা
- ইউ.এস ক্যালিফোর্নিয়া ভ্যারিয়েন্ট ( B.1.427) –এই রূপটি আরও সহজেই ছড়িয়ে পড়েছে। এটি কিছু অ্যান্টিবডি চিকিৎসার কার্যকারিতার উপর সামান্য প্রভাব ফেলে এবং আগের কোভিড -19 সংক্রমণ বা কোভিড-19 ভ্যাকসিন দ্বারা উৎপাদিত অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা হ্রাস করে।
- দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট (B.3.351) – যুক্তরাজ্য সহ কমপক্ষে আরও ২০ টি দেশে চিহ্নিত করা হয়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট।
- ব্রাজিলিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (P.1) ইউকে সহ আরও ১০ টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভ্যারিয়েন্ট।
ভারত, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলের ভ্যারিয়েন্টগুলো ক্রমাগত তাদের স্পাইক প্রোটিনের বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করেছে – মূলত ভাইরাসের এই অংশটি মানুষের কোষে সংযুক্ত থাকে যখন কোন মানুষকে আক্রমণ করে। ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্টের আবার পটেনশিয়াল এক রূপ রয়েছে ( L452R) যা দ্রুত বিস্তার লাভ করতে সক্ষম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এরই মধ্যে, ভারতের ছড়িয়ে পড়া এমন আরও একটি অনুরূপ ভ্যারিয়েন্ট শ্রেণিবদ্ধ করেছে – একে B.1.617 বলে – এটি উদ্বেগের আরও একটি কারণ । N501Y নামক একটি মিউটেশন যুক্তরাজ্য , ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসের সংক্রমণকে আরও বিপদজনকভাবে ও দ্রুত বিস্তার করতে সাহায্য করছে।
আবার কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে যুক্তরাজ্য / কেন্টের স্ট্রেন ৭০% বেশি সংক্রামক হতে পারে – যদিও ইংল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য গবেষণায় বলা হয়েছে যে এটি ৩০% থেকে ৫০% এর মধ্যে রয়েছে।